হীরার গুহায় মুহাম্মদ পেলো যে আলোর সন্ধান
প্রথম তিন বছর কারেও সেই পথে করেনি আহবান।
বিশ্বাস আনে তাঁর স্ত্রী খাদিজা করেই তা শ্রবন,
দশ বছরের আলী, বন্ধু আবুবকর -এই তিনজন।


অতপর, জিব্রাইল আদেশ আনে আল্লাহর নিকট হতে -
আহবান করো আত্মীয়দের সে আলোর পথে।
শুনে সে আদেশ শংকায় কাঁপে মুহাম্মদের প্রাণ
সেই জানে কতটা কঠিন হবে দেয়া সেই আহবান।


কাছে ডেকে বালক আলীকে সে আদেশ জানায়
সামান্য দুধ, খাদ্য ও মাংস সংগ্রহে আনায়।
যাতে হবে বড় জোর একজনের পরিপূর্ণ আহার
ভোজে নিমন্ত্রন পায় পিতামহ-বংশী আত্মীয় তাঁর।


চল্লিশ জন অমন্ত্রিত আত্মীয় আসে সেই ভোজে
মুহাম্মদের চার চাচা সে ভোজের উদ্দেশ্য খোঁজে -
আবু তালিব, হামজা, আব্বাস, আবু লাহাব
উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে দেখে হাব ভাব।


মাংসের এক খন্ড মুহাম্মদ নেয় নিজের হাতে
অতপর ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো করে রাখে এক পাতে -
"শুরু করো খাওয়া সবে এ থেকে আল্লাহর নামে" -
এই বলে মুহাম্মদ ব্যস্ত হয় অতিথি সেবার কামে।


সামান্য সে খাদ্য খায় সকলেই তৃপ্তি সহকারে
হতভম্ব সবাই, কি করে এও সম্ভব হতে পারে!
মুহাম্মদ বোঝে, এখনই এসেছে সেই সঠিক সময়
সকলের উদ্দেশ্যে তাই বলার জন্যে প্রস্তুতও হয়।


হঠাৎ চাচা আবু লাহাব চিৎকারে করে সব ভণ্ডুল -
এ তো মুহাম্মদের যাদু! করো নাকো অন্য ভুল।
গোলযোগে মুহাম্মদের আর কিছুই হলো না বলা
শুনলো না কেউ আল্লাহর বাণীতে মুহাম্মদের গলা।


পরদিন হলো আবার সেই একই আয়োজন
তৃপ্তিতে ভোজ খেলো আমন্ত্রিত অতিথি-স্বজন।
অতপর মুহাম্মদ করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ
আল্লাহর নামে শুরু করে আলোর সে ভাষণ।


ওহে উপস্থিত আব্দুল মোত্তালিবের বংশধর!
আল্লাহর আশির্বাদ এসেছে তোমাদের উপর।
তোমাদের ইহকাল-পরকালে মুক্তির তরে
আল্লাহ নিযুক্ত করেছে আমায় সংবাদ দাতা করে।


আমি চাই পৌঁছে দিতে সেই এক আল্লাহর বাণী
সেই কাজে কে হবে আমার ভাই-সাথী-প্রতিনিধিখানি?
সকলেই নিরুত্তর - সবার ছোট, তেরো বছরের বালক
আলী বলে, আমিই হব সেই জন -ছড়াও এ আলোক।


স্নেহের স্পর্শ রাখে মুহাম্মদ বালক আলীর পিঠে
অতপর বলে সবার তরে, কণ্ঠ অতি মিঠে -
ও আমার মানুষেরা! এই আমার প্রতিনিধি ভাই
শুনো তাঁর কথা, তোমাদের আনুগত্য যেন সে পায়।


আকাশ হয় প্রকম্পিত সকলের বিদ্রুপ-হাসিতে -
দেখো আবু তালিব, তোমার ভাতিজা সম্মান নাশিতে
তোমারেই বলে তোমার আপন ছেলের অনুগত হতে -
অতপর অবজ্ঞায় চলে যায় যে যার নিজ নিজ পথে।