ওহে মহাকাল!
জগতে ফেলেছো যে কুয়াশার জাল
সাধ্য নেই ক্ষুদ্র এই কবি করে ভেদ
মরে না যে তবু তার হৃদয়ের খেদ!


যে জীবন দিবসের ক্ষুদ্র এক পল
সে কি জানে কোথা হতে কোন মহাবল
সূর্য আনে পূর্বাকাশে, অস্ত দেয় পাটে
সারাদিন সেই সূর্য কত পথ হাঁটে?
তার প্রতিক্ষণে কত ঘটনার খেলা
একটি দিনের মাঝে বৈচিত্রের মেলা?
সে কি জানে দিনরাত্রি আসে ফিরে ফিরে
আসে মাস, ঋতু, একটি বছর ঘিরে -
যা দেখে বহুবর্ষী একজন মানুষে
জীবনের প্রতিদিন সন্ধ্যা ও প্রত্যুষে?


জীবনের বহুবর্ষ দেখি মহাকালে
একটি ক্ষুদ্র তিলক গগনের ভালে।
এতোই ক্ষুদ্র যার জীবনের সময়
তার কাছে মহাকাল শুধুই বিস্ময় -
সমস্ত অকল্পনীয়, অজানা যে তার
মহাকাল চলে সরল না চক্রাকার?
অর্বাচীন কবি মরে ঘোর কুয়াশায়
যে হারায় পথে সে কি চিরতরে যায়?
সম্মুখের গন্তব্যে তার দেখা আবার
মেলে না সরল পথের কোথাও আর?
একদিনের যা কিছু সত্য, মিথ্যা, রীতি
কালপ্রান্তে ফেলে আশা শুধু মৃত স্মৃতি?


না কি মহাকাল চলে চক্রাকার পথে
চলা শেষে শুরু করে পুনঃ শুরু হতে?
প্রিয় বা অপ্রিয় দেখি আজ যাহা কিছু
আগামীর পথে চলি ফেলে সব পিছু।
প্রিয় যাহা পুরাতন হয় তা অপ্রিয়
নতুন প্রিয়ের বানে অপ্রয়োজনীয়
পড়ে রয় অবহেলায় - তবু নির্লাজ
আবার প্রিয় হবার মহাস্বপ্নবাজ!
কালের চক্রে কি পুনঃ কোন এক ক্ষণে
ফিরে আসে প্রিয় হয়ে মানুষের মনে?
একদিনের রীতি, যা সময়ের ঝড়ে
নতুন রীতির তরে যদিও তা মরে
পুনরায় কোনদিন সে আবার এসে
কোন ক্ষণে জন্ম নেয় বিজয়ীর বেশে?


আসে কি বা না আসে সে এক মহাঘোর
রে নির্বোধ কবি! বল্ সাধ্য কিরে তোর
করবি সে রহস্য ক্ষুদ্র জীবনে উদ্ঘাটন?
রাখ না তা হৃদয়ের গহীনে গোপন
মেনে নেরে এ জগতে যাহা কিছু জানা
খুবই সামান্য তা। অজানার সীমানা
নেই কারো জানা। হয়তো যা-কিছু জানি
দিয়েছে তাই কুয়াশার পর্দাটি টানি'
হলো না তাই জানা আসলেই যা সত্যি
আর যা ভাবি জানা, তাও মিথ্যায় ভর্তি।