বিশ্ব-মানবতার তরে, করুণার যে নবী
স্রষ্টা নিজেই শিক্ষক তাঁর - শিখিয়েছিল সবই।
দুগ্ধ-ভ্রাতা-বোনের সাথে দুগ্ধ-মাতার ঘরে
মাঠের সাথে, পশুর সাথে তাঁর পরিচয় গড়ে।

মায়ের কাছে ফিরে এসেই হলো মাতৃহারা
রাখালবেশে শিক্ষা শুরু - সব নবীদের ধারা।
আবু-তালিব চাচার ঘরে অভাবে দিন কাটে
বাল্যকালে তাই নবীজি ভেড়া চরায় মাঠে।

বিস্তীর্ণ মরুর বুকের রূপ ও নীরবতা
মনের মাঝে ছায়া ফেলে স্রষ্টা যে, তাঁর কথা।
রুক্ষতা যার চতুর্দিকে, দক্ষ হলেই রাখাল
নিরাপদে রাখতে পারে অবুঝ ভেড়ার পাল।

খই ফুটানো তপ্ত মরুর বালুতে যার কাজ
তাঁর কি সাজে আরাম-আয়েশ বিলাসিতার সাজ?
সামান্য জল-খাদ্যে ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবারণ
সারাটাদিন ভেড়ার সাথে ধৈর্যে আচরণ।

ভেড়ার সেবায় নিবেদিত, ভেড়ার সাথে জীবন
এর চেয়ে কী গড়তে পারে অহংকারহীন-মন।
তাই তো সে মন হীন ভাবে না অন্য কোনজনে
বেহেস্তে কেউ যাবে নাকো অহংকারী-মনে।

হিংস্র-বন্য নিঠুর পশুর মৃত্যু থাবা হতে
নিরীহ ভেড়া চালাবে যে নিরাপত্তার পথে
চিন্তাতে সে তীক্ষ্ণ হবে, যোদ্ধা হবে দেহে
হৃদয়টা তার পূর্ণ রবে সাহস, প্রেম ও স্নেহে।

পশুর অসুখ, দুর্ঘটনায় যে করুণাময়
মানবতার তরে কঠোর হবে কী তার হৃদয়?
পশুর দুঃখ ব্যথায় সাথী হয়ে জীবন শুরু
অবুঝ মানবতার তরে দুই জাহানের গুরু।

কষ্ট করে বৈধ পথে করবে না যে আয়
বৈধ পথে আয়ের ধর্ম কী করে সে শেখায়?
মরুর বুকে পশুর রাখাল - তাঁর যে উপার্জন
এর চেয়ে কোন বৈধ পথে রুজির হয় অর্জন?

পশুর এমন রাখাল যাঁরা, তাঁরাই শুধু শেখে
মানতে হবে প্রভুর আদেশ সব ভরসা রেখে।
যেমন ভরসা রেখেছিল ইউনুস, মুসা, দাউদ
বিপথগামী ছিল যখন ফেরাউন ও হুদ।

তেমনি করেই আল্লাহ তৈরী করলো শেষের নবী
বিনয়, প্রেম ও ধৈর্যে হবে বিশ্বে বিরল ছবি।
গায়ের ঘামে জীবন রবে সেই আল্লাহর পথে
প্রশ্নবিহীন সমর্থন তাঁর রবে স্রষ্টার মতে।