যদি ভেবে থাকো জীবন আমার পাথর-সোপানে হেঁটেছে
দেখোনি পায়ের তালুতে আমার কোন বেদনা কেঁদেছে।
যদি ভেবে থাকো গায়ের চর্ম সহজে মসৃণ হয়েছে
দেখোনি খোসা উঠে উঠে সে কতটা বেদনা সয়েছে।


যদি ভেবে থাকো উপরে উঠার সিড়িটা কখনো ভাঙেনি
মখমলে ঢাকা ধাপে রাখা পা রক্তে কখনো রাঙেনি
তবে শুনে রাখো বহুবার ভেঙে পড়েছি গহীন নিচে
ভেবেছি আঁধারে আলো খুঁজে ফেরা নিছক স্বপ্ন-মিছে।


যদি ভেবে থাকো জীবনের দোড়ে থামিনি পথের বাঁকে
যদি ভেবে থাকো চলার পথে পড়িনি আঠালো পাঁকে
তবে শুনে রাখো সকলই ছিল, সকলই সয়েছি পথে
যতটুকু হেঁটে যেটুকু উঠেছি - সুদৃপ্ত মনোরথে।


আমার সে পথ ফেলেছি পেছনে, সামনে যা দেখো আজ
সহজ সে পথে আশা করি শুধু তোমার হাঁটার কাজ।
একা ভাবো কেন? এখনো রেখেছি আমার দুহাত বাড়িয়ে
খুশী হতে চাই দুচোখে দেখে আমাকে গিয়েছো ছাড়িয়ে।


জীবনের পথে আসবে জেনো সময়ে নানান ঝড়
শক্ত হয়ে দাঁড়াবে তখন যেন পাথর এক অনড়।
কখনো জীবন মনে হতে পারে একঘেয়েমী খেলা
কারো আঘাতে ভাঙে বিশ্বাস, কারো পাবে অবহেলা।


কখনো ভাববে, পালাই কোথাও সব ফেলে রেখে পথে
বিশ্বাসে তবু ফুল ফুটাবে পাথরে ফাটল হতে।
শক্তি যেখানে ব্যর্থ হবে, বুকের নরম প্রেমে
দেখবে সেখানে আকাশের তারা আসবে চরণে নেমে।


কিছুই আসে না যদি না থাকে পাওয়ার প্রবল ইচ্ছা
সহনশীলতা সম্ভব করে সব অসম্ভব কিচ্ছা।
সহজে প্রাপ্য অধিক সম্পদ খুন করে ফেলে পুরুষ
মৃত্যুর আগেই কবরে রাখে ভোগের দেহকে বেহুশ।


সুখের চাহিদা অতি সামান্য - লোভে যদি হও তিমি
হৃদয় হবে শুকনো জমাট, দলা বাঁধা মৃত কৃমি।
জীবনের পথে ঠকলে কোথাও ভেবো না হারালে সব
ঠকবে যত বাড়বে তত শিক্ষা ও অনূভব।


দেখবে জীবনে বহু বোকারাই হয়েছে অনেক সফল
চতুরের বহু চাতুর্য গেছে শেষমেষ রসাতল।
একাকী হয়ে কখনো খুঁজো নিজেকে নিজের মাঝে
মিথ্যা সবই, হারালে নিষ্ঠা নিজ বিশ্বাস-কাজে।


হতে পারো তুমি সৃষ্টিশীল যদি রও কভু একাকী
অন্যের চেয়ে হবেই আলাদা - নিজেরে দিও না ফাঁকি।
কখনো এলে অলস সময় অভিপ্রায় রেখো সুগভীর
যত তলহীন হোক সমুদ্র খুঁজে ঠিক পাবে তার এক তীর।


যেমন তুমি তেমনই হবে, নাইবা হলে শেক্সপীয়ার
নাহলে নজরুল, রবীন্দ্রনাথ - তাতে এমন ক্ষতি কী আর?
মুক্ত যখন কল্পশক্তি তুমিই ফ্যারাডে, আইনস্টাইন
ভিন্নতা আনে নতুন পৃথিবী - ইতিহাসে সেটাই আইন।


হারাবে কেন জীবনের প্রতি আস্থা এতোটা অল্পে
জীবনের কথা লিখে যাবে তুমি তোমার নতুন গল্পে।