বেকরত্বের বুকভরা জ্বালা, স্বপ্নচারী হেঁটে চলে
ক্রমে সংশয় শ্লথ করে পদ - রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, জলে।
বস্তির এক জীর্ণ ঘরে প্রাণের বধূ তার
ছিন্ন শাড়ীর আঁচল পেতে লুটায় দেহের ভার।
শীর্ণদেহীর শুকনো স্তনে পাশেই শুয়ে খোকা
চুষে চুষেও দুধ না পেয়ে বোঝে মায়ের ধোকা।
মা বোঝে সেই খোকার বাবার ধোকাও নিত্যদিন -
আর কটা দিন সবুর করো - মিথ্যে স্বপ্ন-রঙিন।
খোকার বাবা ধোকা বোঝে নিঠুর পৃথিবীর
পেটের ক্ষুধা লুটায় কেমন বোধের উচ্চশির।
পথের বুকে লাথি মেরে যুবক পড়ে যায়
দেহের গন্ধ ঘামের সাথে স্বপ্নও ঝরে যায়
কেউ দেখে না, ভালোবাসা তখন মরে যায়!


ভাগে পাওয়া পূর্বপুরুষের জমিনের এক কণা
লাঙল দিতে কৃষক দেখে বিষধর এক ফণা।
পলাতক মন জামানত আজ বেনিয়ার দেয়া ঋণে
আজ নয় কাল নয়া জমিদার নেবে সে জমিও কিনে।
দাসত্বের ক্ষতে ভুমিহীন বাপের সোমত্ত সব ছেলে
বিদেশে খোঁজে, মা ও বোনের ইজ্জত যদি মেলে।
মিলে যায় ঠিকই নতুন খেতাব - মিছকিন, ভিক্ষুক
বিদেশী লাঙলে সেথা ফালা ফালা হয়ে যায় তার বুক।
সম্পর্কটা বাঁধা থাকে বিশাল ঋণের যোগানে
তার হৃদয়ের স্বজনী যে জন, কে তার ঠিকানা জানে?
স্বর্ণালী তার স্বপ্নগুলি বিবর্ণ ঝরে যায়
নিসঙ্গ চাঁদ আকাশে কাঁদে, অমানিশা ভরে যায়
কেউ দেখে না, ভালোবাসা তখন মরে যায়!


প্রতিবাদবিহীন রাজপথে মেলে উন্নয়ন-অঙ্গীকার
ক্রূর দক্ষতায় লালিত সন্ত্রাস, হত্যা ও অবিচার।
ফুটপথে জাগা ডাস্টবিনে বাস মানুষ আর কুকুরে
বিক্রিত চেতনা আত্মমগ্ন তৃপ্তির ঢেকুরে।
অবরুদ্ধ কণ্ঠে কাঁদে একুশের অক্ষর
আগত প্রজন্মের ভাগ্যে খোদিত অন্ধকার-গহবর।
মেরুদন্ডহীন, নপংশুক যুবক সুপুত্র মায়ের কোলে
নিদ্রামগ্ন দেশনেতাদের সম্মোহনী মধু-বোলে।
দেশপ্রেমী সব ব্যস্ত নেতা উড়ে আসে,উড়ে যায়
উন্নয়ন-বন্যায় ভাসে সম্মাননায়, চৈতন্য পুড়ে যায়
কেউ দেখে না, ভালোবাসা তখন মরে যায়।