দক্ষিণ পাশে বাতায়ন কাছে
ঘন পল্লব রয়েছে যে গাছে,
দুইটা দোয়েল সেথা এসে বসে
তাদেরই রবে ঘুম মোর নাশে।


খুব ভোরে এসে ঘটা করে তারা
হাজিরা জানায় দেখে শুকতারা,
ওঠো ওঠো ওঠো ঘুমিয়ে একি !
প্রভাত হয়েছে মেলে দেখ আঁখি।


ললিত রাগেতে ভজন যে গায়
পরমেশ তুমি ওগো দয়াময়,
ঘুমেতে তখন চোখ জুড়ে থাকে
ওরে পাজি যা তো থাকিসনে শাখে।


প্রাতঃকালে তারা করে ডাকাডাকি
মনে যেন হয় ভৈরবী নাকি ?
গেয়ে যায় গান হও আগুয়ান
কে আছ কোথায় ? কাজে দাও মন।


অতঃপর তারা কোথা যেন যায়
খাদ্যের খোঁজে হবে নিশ্চয়,
আনমনা হয়ে ভাবি বসে বসে
কখন যে তারা পুনরায় আসে।


স্নিগ্ধ দুপুর পাতার নূপুর
মৃদু মৃদু বায়ে লাগে সুমধুর,
পুরুষ দোয়েল বিরহের ডাকে
গেয়ে যায় গান কৌশিকীর রাগে।


গোধূলি বেলায় পূরবীর রাগে
মেয়ে যে দোয়েল গায় অনুরাগে,
ঝুমুর গানেতে পুরুষ দোয়েলে
নেচে নেচে যায় ব্যতীত মাদলে।


সন্ধ্যাকালেতে ভূপালি রাগেতে
মেতে ওঠে তারা মালশ্রী গানেতে,
ক্ষমা করো মাগো ভুল যদি হয়
তুমি তো অসীম তুমি কৃপাময়। (সংক্ষেপিত)


শব্দার্থ : ললিত - রাতের চতুর্থ প্রহরে অর্থাৎ শেষ রাতে গেয় সংগীতের রাগবিশেষ, ভজন - প্রর্থনাসংগীত, ভৈরবী - দিবার প্রথম প্রহরে গেয় রাগ, কৌশিকী - দিবার মধ্যভাগে গেয় রাগ, পূরবী - গোধূলি বেলায় গেয় রাগ, ঝুমুর - নৃত্য বহুল সংগীত, ভূপালি -রাতের প্রথম প্রহরে গেয় রাগ, মালশ্রী - শ্যামাসংগীতবিশেষ


বি.দ্র. মাত্রাবৃত্ত অন্ত্যমিল ছন্দে লেখা,প্রতি চরণে দুটো করে পর্ব আছে,প্রত্যেক পর্ব ৬+৬ মাত্রার।


(সবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে নিরন্তর কল্যাণ কামনা)