।নামমাহাত্ম্য।


বৃক্ষ কোথায় হারিয়ে গেছে
যা আছে সব গাছ
মৎস্য আছে অভিধানে
হাট-বাজারে মাছ।
ভালুক যদি ঋক্ষ নামে
জানায় পরিচিতি
এই বানানে শহর-গ্রামে
ফিরবে না তার স্মৃতি।
কাক-এর মানে বায়স, সেটা
ভুলেই গেছে কাকে
ইন্দ্রলুপ্ত লোককে সবাই
টাকলু নামে ডাকে।
দই থেকে বানিয়ে ঘোল
নাম দিলে তার তক্র
খায় না কি তা গায়ে মাখে
ব্যাপার বড়ো বক্র।
জলের কুমির ডাঙায় এলে
কাঁপবে গোটা পাড়া
নক্র নামে ডাকলে তাকে
কেউ দেবে না সাড়া।
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ
ব্যাঙ-এর চেনা ডাক
মণ্ডুক বড়ো কূপমণ্ডুক
হয় না পরিপাক।
পলাণ্ডু খুব খটোমটো
পেঁয়াজ ঝালেঝোলে
অলাবু নাম কেমন কেমন
লাউ-ই মাচায় দোলে।
কুষ্মাণ্ড যায় না চেনা
কুমড়ো লোকে খায়
বার্তাকু-র গরজ ভারি
সবাই বেগুন চায়।
কেউ কি জানে পেঁচা-র কবে
উলূক নামে খ্যাতি
তেঁতুল গাছের শীতল ছায়া
তিন্তিড়ী কিম্ভূত-ই!
ব্রততী নাম বললে পরে
কেউ বোঝে না কিছু
লতা সে তো লতিয়ে ওঠে
ঠেকনা পেলে নীচু।
পুষ্প নামে ডাকলে তবু
চিনবে লোকে ফুল
প্রসূন নামে তকমা দিলে
বুঝতে হবে ভুল।
ক্রৌঞ্চ কবে মরেই গেছে
রামায়ণের আগে
সেই খবরে বক-বাবাজি  
কাঁপছে ভীষণ রাগে!
তৃষ্ণা পেলে ছেলেবুড়ো
জল-এ মেটায় তেষ্টা
উদক চাইলে ফাটবে ছাতি
যতই করো চেষ্টা।


ঋণ স্বীকার: হারিয়ে যাওয়া নাম/সন্তোষকুমার গঙ্গোপাধ্যায়


।অরি মিত্র।