।তুমিও কথা রাখলে না।


(কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের "কেউ কথা রাখেনি" কবিতাটি মনে রেখে)


কেউ কথা রাখেনি, তুমিও কথা রাখলে না;
তুমি চলে গেলে--
তোমার স্বপ্ন, তোমার শস্য
তোমাকে বাধা দিল না!


অথচ, তোমার কথা রাখার কথা ছিল;
কেউ কথা রাখেনি বলে যে দুঃখ তোমার,
সেই দুঃখই তোমাকে দিয়েছিল উত্তরণের চাবি।
তোমার প্রাপ্তি, তোমার ফিরিয়ে দেওয়া
সবই তো সেই--
শুক্লা দ্বাদশীর দিন সেই বোষ্টুমি
তোমাকে গানের অন্তরাটুকু
শোনায়নি বলে!
কিংবা মামাবাড়ির মাঝি নাদের আলি
তোমাকে তিন প্রহরের বিল দেখায়নি-- তাই!
লস্করবাড়ির ছেলেরা তোমাকে
লাঠিলজেন্স দেয়নি বলে তোমার মনে
সারা জীবন জমানো ছিল এত অভিমান!
চৌধুরীবাড়ির রাস-উৎসবে ফর্সা রমণীদের আমোদের হাসি--
তা কি তোমার নীরার চেয়েও বেশি রহস্যময়ী?


আর, বরুণার কথা তোমার ভুলে যাওয়াই ভালো ছিল;
বুকে-গোঁজা সুগন্ধি রুমালে যে নারী
খোঁজে মাংসের আস্বাদ--
তাকেও তুমি মনে রেখে দিলে সারাটা জীবন!
অনেক বরুণার ভিড়ে সুরার মধ্যে সুর খোঁজার প্রযত্ন তোমার  
তোমাকে ভুলিয়ে দিল কেউ কথা না রাখার দুঃখ;--


তুমিও কথা রাখলে না!


অরি মিত্র