আমার পিতা আমার অনুপ্রেরণা,
আমার আদর্শের পথ প্রদর্শক,
আমার মনোজগতের পাঠশালা,
আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।


কৈশোরে পিতা হারিয়ে
পড়লেন অকুল সাগরে।
হঠাৎ যেন থমকে গেলো জীবন,  
দু'চোখে যেন ঘোর অন্ধকার !


সেই কৈশোর কালে,
দৃঢ় মনোবল আর আত্মপ্রত্যয়ে
হাল ধরলেন সংসারের,
সংসারের চাহিদা মেটাতে
বিসর্জন দিলেন উচ্চ শিক্ষাজীবন।


গ্রামের মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতার
মহান পেশায় শুরু করলেন কর্মজীবন।
সংসারে স্বচ্ছলতার জন্য
শিক্ষকতার পাশাপাশি শুরু  করলেন ব্যবসা।
কঠোর পরিশ্রমে ধীরে ধীরে,
সংসারে ফিরতে শুরু করলো সুখ বসন্ত।


শিক্ষকতা এবং ব্যবসার পাশাপাশি,
জড়িয়ে গেলেন সামাজিক কর্মকান্ডে,
একটা সময় চলমান জীবনে সামাজিক ব্যস্ততার কারণে,
অব্যাহতি নিলেন শিক্ষকতা পেশা থেকে।


যে স্কুলের শিক্ষক ছিলেন,
কালের পরিক্রমায় এক সময়ে হলেন
সেই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি,
ততদিনে ধীরে ধীরে সামাজিক শালিশ ব্যক্তিত্ব হিসেবে
পুরো এলাকায় নামডাক পড়ে গেলো,
সময়ের আবর্তনে এলাকার মানুষের অনুরোধে,
দাঁড়িয়ে গেলেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে,
এলাকার মানুষের আন্তরিকতা ও ভালোবাসায়,
বিজয়ী হয়ে গেলেন অনায়াসে।


মানব কল্যাণে ব্যয় করতে লাগলেন সময়,
অবহেলিত এলাকার শিক্ষার আলো জ্বালাতে উদ্যোগি হলেন,
মনে লালন করলেন
গ্রামে কলেজ প্রতিষ্ঠা করবেন।


অজো পাড়া গা,
বিদ্যুৎ নেই,রাস্তা নেই,
সেই গ্রামে হবে কলেজ !
গ্রামের মাতব্বর প্রকৃতির লোকেরা টিপ্পনী কাটতে শুরু করলো,
চেয়ারম্যানের মাথা গেছে !
পাগল হয়েছে চেয়ারম্যান !


তবুও তিনি থামবার পাত্র নন,
অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে সহমতের অনেককে সাথে নিয়ে,
ইচ্ছার পরিপূর্ণতা ঘটালেন
পিছিয়ে থাকা জনপদে কলেজ স্থাপন করে।


আজ তিনি নেই,
হারিয়ে গিয়েছেন চক্ষুর অন্তরালে,
তাঁর স্বপ্ন আজ মাথা উঁচু করে
দাঁড়িয়ে আছে,
একদা অবহেলিত জনপদে
অন্ধকার রাত্রিতে চাঁদের আলোর মতো,
সেই আলোতে তিনিও বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন,
শিক্ষা প্রসারের আলোকবর্তিকা হয়ে।


===============================


৩৫০ তম কবিতা
-------------------------
উৎসর্গ ®
আমার জীবনের অনুপ্রেরণা,
আমার আদর্শের পথ প্রদর্শক,
আমার মনোজগতের পাঠশালা,
আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক
আমার জন্মদাতা আমার পিতাকে।
যাকে আজ থেকে পাঁচ বছর আগে হারিয়েছি।


মহান রাব্বুল আল আমীন যেন আমার পিতাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করেন। আমিন।


===============================