জন্মেছি মাগো তোমার বুকে
পেয়েছি এক নতুন শব্দ বাংলাদেশ।
অসমাপ্ত আত্মজীবনীর তরে
ছিনিয়ে নিয়েছো 'বাংলা'পাক বাহিনীর হয়েছে অবশেষ।


১৯৪৭এর কথা বলছি
ভারত এবং পাকিস্তান বিভক্ত হলে
শুরু হয় অসহ্য অত্যচারের রীতি
বাংলা ভাষা নি:শেষ করতে।


প্রতিবাদে নেমে পড়ে
ভাষাবিজ্ঞানী ও কবি সাহিত্যিকরা
বাংলা ভাষা চলবে চলবে বলে।
সেই থেকে প্রতিবাদী বাঙালীরা।


১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে
রাজপথে নামে বাঙলার সংগ্রামীরা
প্রাণ হারায় বুলেটের অাঘাতে
বরকত, জব্বার,রফিক, সালামেরা।


কবি মাহবুব -উল-আলম ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে
রচনা করেন 'কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি,
তরুণ কবি অালাউদ্দিন অাল আজাদ নিয়ে আসে
'স্মৃতির মিনার' অমর কবিতাটি।


সারাদেশের মানুষ আন্দোলনে ভাষার দাবীতে হয় আন্দোলিত
সঙ্গীতশিল্পী আবদুল গাফফার রচনায়
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি হয় উদিত
আবদুল লতিফের কন্ঠে ভাসে 'ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়'।


আওয়ামী মুসলিম লীগের উদ্ভবে
শান্তি নামতে শুরু করে বাংলার জনগণের কাছে
কুকুরদের চোখে পড়তে না পড়তে
রোষানলে পড়ে বঙ্গবন্ধু বন্দী হয় কারাগারে।


কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু বের হলে
আওয়ামী লীগের উদ্যোগে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হলে
২১দফার দাবী নিয়ে আসে,
যার ১ম দাবী ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে।


আদমজী পাঠকল ও কর্ণফুলীতে
বাঙ্গালি -অবাঙ্গালি দাঙ্গাকে অজুহাত করে
পাকিস্তানের গভর্নর যুক্তফ্রন্ট সরকারকে
বরখাস্ত করে ফলে যুক্তফ্রন্ট হারালো ক্ষমতা যে।


শেরে বাংলা হল গৃহবন্দী
শেখ মুজিবসহ তিন হাজার নেতাকর্মী হল গ্রেফতার,।
১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন করে জারি
গণতন্ত্র বিচ্যুত করে শেষ চেষ্টা করে পাকিস্তান রক্ষার।


ইইস্কান্দারকে টপকে আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট হল
পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য চরম আকার ধারণ করে।
ফলে ১৯৬১ সালে শুরু হয় সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন
ছাত্রসমাজ আরও প্রতিবাদমুখর হয় সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেফতার করলে।


১৯৬৬ সালে ভারত -পাকিস্তানের যুদ্ধে পাকিস্তান পরাজিত হলে
রবীন্দ্র সঙ্গীতকে 'হিন্দু সংস্কৃতি ' নজরুল ইসলামের গানে
হিন্দুয়ানির অভিযোগ তোলে
ফলে বাঙালি জাতীয়বাদী রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে।


বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে আবার বের হন
১৯৬৬ এ আওয়ামী লীগের সভাপতিত্বে
৬ দফা আন্দোলনের ডাক দেন
মুক্তির সনদ গ্রহণ না করলে আন্দোলন অনিবার্য হয়ে ওঠে।


আগরতলা মামলা হলে
প্রত্যহারের দাবীতে আন্দোলন হয়ে ওঠে আরও তীব্র
৬ও১১ দফায় আন্দোলন সৃষ্টি হলে
বাঙ্গলার স্বাধীনতার তরে গণজাগরণ হয় সৃষ্ট।


১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের তরে
আইয়ুব খান পদত্যাগ করে
ইয়াহিয়া আসন দখল করলে
অত্যাচার আরও তীব্র হয়ে ওঠে।


১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলে
শুরু হয় নানারকম ষড়যন্ত্র আর প্রতিবাদ করলে
নিরীহ মানুষদের অকারণে হত্যা করে,
ধর্ষণ, ঘরবাড়ি নিধন আরও অকথ্য নির্যাতন করে।


নিরীহ মানুষের দুঃখ সহ্য করতে না পেরে
রাজনীতির কবি ডাক দেন এক মহাসমাবেশে
বলেন,প্রত্যেক ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো
তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।


রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দিব
তবু এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ্‌
মহান বাণীর ফলে
বাঙ্গালীরা এক হয়ে বলে শক্তি দাও সৃষ্টিকর্তাহ্।


কবি শেষে অমর কবিতাখানি
রচনা করিলেন সংগ্রামী অনুভূতিতে,
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
যোদ্ধাদের দিলো প্রেরণা ভয় যেন না হয় যুদ্ধের ময়দানে।


২৫ শে মার্চ নৃশংসভাবে গণহত্যা চলে
বাঙালিরা সহ্য করতে না পেরে জীবন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে।
দেশকে পরাশক্তির হাত থেকে রক্ষা করে,
নতুন রাষ্ট্র বাংলাকে পরিচয় করাও পৃথিবীর বুকে।