হে গুঞ্জরিনী, যাবে আমার গাঁয়?
দেখবে সেথায় কেমন করি সাথীরা মধু খায় ;
যাবে কি ওই বলভদ্রের পাড়?
বসে আছে ডিঙি মাঝি, নিয়ে হাতে দাঁড় ;
চারিদিকে শস্যক্ষেত্র, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে পাখি,
গোধুলির ক্ষণে মুগ্ধ হয়ে খুলবে সেথায় আঁখি!
এইতো চলে অগ্রায়ণ,
প্রেমানন্দে কৃষক তাহার অন্ন ঘরে তুলে
মধুর সুখে, বাউল সুরে, ধানগাছগুলা দুলে তালে।
যাবে আমার গাঁয়?
যেথা সন্ধ্যার পর বিধুর আলো পড়ে বারিধির বুকে,
ফেরার নেশায় ব্যাকুল হয়ে পাখিরা ডাকে সুখে।
যেথা অন্তিম সূর্য্য দেখবে বলি জড়ো হয় সব মাঠে,
কাঠঠোকরা আপন মনে, কুট কুটিয়ে গাছ কাটে।
দেখবে কি গো?
দেখবে সেথায় বাতাস তাহার রূপ পাল্টে ফেলে,
স্নিগ্ধতা ছড়ায় বয়ে চলে হাটু সমান জলে।
সর্ষে হলুদ বর্ণ তাঁহার, বসন্তের ছোঁয়ায়,
জাব পোকা আড়ি পাতে গুল্মের পাতায় পাতায়।
কুসুম বর্ণ আকাশ সেথায়, রক্ত বর্ণ সূর্য্য,
সৌন্দর্যের মহিমায় আজ লাজ পাবে সব মৌর্য।
সেথায় শীতের সকাল হয়গো শুরু উনুনের পাশে বসে,
চিতই-ভাপাই পেটপুরে সবে শীতের মাঘ মাসে।
সেথা রাখাল বাজায় বাঁশি, আপন মনে হাসি,
দুঃখ সন্ন্যাস সেথায় আমার, সবাই হাসি-খুশি।
উত্তরিলা গুঞ্জরিনী,
নিবে আমায়?
থাকবো সেথায় সারাবেলা শিউলি ফুলের ডগায়।