শ্রেষ্ঠত্ব
প্রশান্ত মিত্র (শান্তা)


সর্ব ধর্ম গ্রন্থে বর্ণিত আছে,মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব।সৃষ্টি লগ্ন থেকে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে।মানুষ কর্ম করে পরের তরে,পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য,চির মুক্তির জন্য।


ধর্ম গ্রন্থ,রাষ্ট্রীয় আইন,সামাজিক বিধিবিধানে  উল্লেখ আছে,কর্মানুযায়ী পুরস্কারের কথা,কঠিন শাস্তির কথা।


শ্রেষ্ঠ জীবের শাস্তি!
তবে কি শ্রেষ্ঠ নয়?
হ্যাঁ,মানুষ মাত্রই শ্রেষ্ঠত্ব নয়।মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হয়।ভেতরের পশুত্ব দ্বারা মানুষ যে নিকৃষ্ট কর্ম করে,পশুর পক্ষেও এহেন কর্ম করা অসম্ভব!হীন কর্মের ফল ভোগ করতে হয়।ভালো কর্মে সুমিষ্ট ফল,মন্দ কর্মে তিক্ত,কর্মানুযায়ী শাস্তি।


শ্রেষ্ঠ জীব কে দেয়া হয়েছে ইচ্ছাধীন কর্ম করার ক্ষমতা।ক্ষমতার অপব্যবহারে মানুষ কু-কর্মে লিপ্ত।যখন উন্মত্ত হয়,কাক পক্ষীর কলরব হারিয়ে যায়!রক্ত নিয়ে খেলা করে!শিয়াল-কুকুর-শকুন সহ হিংস্র পশুকে হার মানায়!


পশু কখনো মাতাল হয়না,রক্ত নিয়ে খেলা করে না।
কিন্তু মানুষ এ-সব কর্ম অবলীলায় করে!
অন্যের আহার কাড়ে,অগ্নিসংযোগ করে,ধর্ষণ করে,লোটপাট করে,ধর্মের নামে লড়াই করে!


মানুষ চাইলেই নিকৃষ্ট হতে পারে,নিকৃষ্ট হওয়াটা ইচ্ছাধীন,নির্ভর করে মনের পশুকে হত্যা করা কিংবা না করার উপর।


উৎকৃষ্ট হওয়া কঠিন!
সারা জীবনের সৎ কর্ম,সত্য ও ন্যায় পথে অবিচল থাকা,ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছা কৃত ভুলের অনুশোচনা,
ক্ষমা-দান দক্ষিণা,মানবতার গান,চির মুক্তির জন্য প্রার্থনা সহ,গুন সম্পন্ন কর্মের দ্বারা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হয়।


স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব পৃথিবীতে আসে নিষ্পাপ দেহে,এখানে আসার পর যাহারা,আমৃত্যু গুন সম্পন্ন কর্মের দ্বারা শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখে,তাহারাই শ্রেষ্ঠ।


অমানুষিক কার্যকলাপ করে,বাহ্যিক আকৃতিতে শ্রেষ্ঠ দাবি করাটা হাস্যকর!