ফাগুনের প্রথমার্ধে শৈশব,শেষার্ধে কৈশোর,চৈত্রের শুরুতে যৌবন,বসন্তের বিদায় লগ্নে বার্ধক্যের ছাপ,হারিয়ে গেছে কুয়াশার শুভ্র চাদর,ক্ষমতায় থাকতে অনিহা,হস্তান্তরের দিকে হাটছেন রাজা,এহেন পরিস্থিতিতে জগতবাসী অত্যন্ত মর্মাহত!


সর্বজন গ্রহনযোগ্য রাজার রাজত্ব কালে;সবাই সুখেই ছিলাম,শান্তিতে ছিলাম,অভিযোগহীন ছিলাম।


এমন সুখ অন্য কারোর পক্ষে দেয়া অসম্ভব!অনন্ত কালের ইতিহাস তার সাক্ষী।ভবিষ্যতেও কারোর পক্ষে সম্ভব নয়।


তবুও বদল মেনে নিতে হচ্ছে,গ্রীষ্মকে আগাম চেয়ে নিচ্ছে সবাই,একমাত্র প্রভাকরের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য;গগনে মেঘের ভেলা বড্ড প্রয়োজন।জগতবাসী অতিষ্ঠ!


ভানু তেজে তপ্ত ধরিত্রী,ভূমি চৌচির কাঠফাটা রোদে,তৃষ্ণার্তরা করছে ছটফট!দুরবস্থা দেখে সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছেন গ্রীষ্ম।


বসন্ত রাজ এখনো সিংহাসনে বসে আছেন,এখানে জোরপূর্বক কেউ ক্ষমতায় বসেনা,স্বেচ্ছায় চলে পালাবদল,বিপদ মূহুর্তে একজন অন্যজনের পাশে দাঁড়ায়।


বর্তমানের চাহিদা মেটাতে;সাথে করে নিয়ে এসেছেন মেঘের ভেলা,উত্তর-পশ্চিম হতে দমকা হাওয়া,ঝরঝর বৃষ্টি।


ঝরা পাতার বুকে জমেছে জল,পুষ্প-পল্লব-মুকুল করেছে ভূমির উপরিভাগ দখল,দৃশ্যটা বসন্ত কালের নব বধূ দের যেন শাড়ির আঁচল।


গ্রীষ্ম কে  মেনে নিয়েছে সবাই,কিছুদিন পর হবে আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা হস্তান্তর,বৈশাখী মেলায় পান্তা ভাতের আয়োজনে হবে গ্রীষ্মের রাজ্যাভিষেক।


অপেক্ষমাণ সবাই,মুসল ধারে বৃষ্টির জন্য,তৃষ্ণা নিবারনের জন্য,এপর্যন্ত যাই পেয়েছে সবাই,তা দিয়ে কোনক্রমে জীবন রক্ষা সম্ভব হয়েছে।


সবাই আশাবাদী;গ্রীষ্ম ক্ষমতায় এসে সবাকার চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবেন,তৃষ্ণা মুক্ত  হবে বসুন্ধরা,শস্য-শ্যামলে ভরে যাবে রুক্ষ প্রকৃতি,দোষমুক্ত হবে গ্রীষ্মের শাসন।


প্রকৃতিতে বসন্ত রাজের মৃত্যু নেই,এই রাজা অত্যন্ত সম্মানিত!অনন্ত কাল ধরে;ঋতু চক্রে বার-বার ফিরে আসেন,সবার জন্য সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে।


আগামী বসন্তে;আবারও যেন ঋতু রাজের সাথে সবার সাক্ষাৎ হয়।সবাই যেনো;বসন্তদূতের ডাকে সাড়া দিয়ে,রাজ কে আবারও গ্রহণ করতে পারি।এই সৌভাগ্য যেন প্রত্যেকের জীবনে ফিরে আসে।


পরিশেষে,বসন্ত রাজার জয় হোক!