লাঠিতে ভর দিয়ে দাদু হাটতো কষ্ট করে,
বুঝতামই না রাখত কেন শক্ত করে ধরে!
বলেছিলাম,ভাল্লাগে না!লাঠি কেন হাতে?
কেন করে কিড়িমিড়ি ভাঙা ক'টা দাঁতে!?
কষ্ট করে লাঠি ধরে রাখার কি প্রয়োজন!?
ইচ্ছে করে ভেঙে দিতে দেখি হাতে যখন!
লাঠি বহন করে কষ্ট আপন হাতে কোরো,
দাওনা কেন ফেলে তবে!?শক্ত হাতে ধরো!
লাঠি হাতে নেয়ার পরেই গেছে গতি কমে,
হাটার কালে চরণ দু'টি ক্ষণিক পরে থামে!
দাদু তুমি আপন ইচ্ছায় হারালে যে গতি!
কেন করলে লাঠি ধরে এত বড়ো ক্ষতি!?
হাসি মুখে দাদু তখন বলে ছিলো আমায়,
'স্বইচ্ছাতে লাঠি ধরতে কেহ কি কভু চায়?
লাঠি হল সর্ব বৃদ্ধের সবচে বেশি আপন,
ছাড়ে যবে চড়ে চিতা,পরে সফেদ কাফন।
দুর্বল দেহের শক্তি বাড়ায় বন্ধু হয়ে লাঠি,
লাঠি সঙ্গে আছে বলেই কোনক্রমে হাঁটি।
হাতে নাহি রাখলে লাঠি কাছে টানে ভূমি,
পড়ে গেলে পাশে বসে কাঁদবে কিন্তু তুমি!
লাঠির সনে দোস্তি হলে রাখে সদা কাঁধে,
পড়তে হয়না ভূমি 'পরে,চক্ষু নাহি কাঁদে।
শক্ত করে ধরে যখন কাউকে বহন করো,
সে কখনও দেহযন্ত্র দেয় কি করে গুড়ো?
সদা কারোর সম গতি থাকেনা ভাই দেহে,
গতি এনে দিতে গিয়েই লাঠি আসে গৃহে'।
দাদু এখন লাঠি ফেলে শুয়ে মাটির খাটে,
কেউ ধরেনা এই লাঠিটি,সঙ্গে নাহি হাঁটে।
স্মৃতি পত্র পড়ে আজি,অশ্রু সজল নয়ন!
ক'দিন পরেই হবে লাঠি চলাচলে আপন।
অযত্নে আর দাদুর লাঠি গড়াবে না ভূমে,
বাঁকা দেহ লাঠিটিকে সিক্ত করবে ঘামে।