সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাসী এক ভালো জনৈক
এবং সে ছিল এক শহরের এক গরীব যাজক
কিন্তু পবিত্র চিন্তা ভাবনায় সে ছিল ব্যাপক উন্নত
সে ছিল পুরোহিত এবং বেশ পড়ুয়া শিক্ষিত।  ৪৮০
চাইত সঠিকভাবে প্রচার করতে যীশু খ্রিস্টের বাণী
পল্লীবাসীদের শিক্ষা দিয়ে করতে  যথাযথ জ্ঞানী
সে ছিল অত্যন্ত পরিশ্রমী যাজক এবং দয়ালু মহান,
এবং বিপদ আপদের দিনেও ছিল খুবই ধৈর্যবান
এমনটা বহুবার করেছে প্রমাণ। আয়ের দশমাংশ কর
না দেওয়ার ফলে গীর্জা থেকে নারী কিংবা নর
কাউকে বিতাড়িত করা তার কাছে অপছন্দনীয়, বাজে।
বরং তার ন্যায্য পাওনা, বেতনের একাংশ গরীবের মাঝে
বিলিয়ে দিতে সে যে ইচ্ছুক; তাতে সন্দেহ না জাগে;
নিজ প্রয়োজন মেটাতে  তো খুব সামান্য অর্থই লাগে।


যাজকপল্লীর বাড়িগুলো অবস্থিত খুব দূরে দূরে
কি ঝড় কি রোদ বৃষ্টি সব প্রতিকূল উপেক্ষা করে
অসুস্থই থাকুক কিংবা সমস্যাতেই পড়ুক তবুও সে,
ধনী গরীব উচু-নিচু ছোট-বড় জাত-বেজাত নির্বিশেষে
সকলের বাসায় পায়ে হেঁটে, হাতে লাঠি সাথে যাবে
সমবেত লোকের কাছে এই উদাহরণ আওড়াবে
“সে খৃস্টের বাণী থেকে নিজে আগে নিয়েছে দীক্ষা
তারপর সে অন্যকে এখন দিচ্ছে সৎকর্মের এই শিক্ষা”।
এবং এই শিক্ষার সাথে করে আর একটুখানি যোগ
এখানে লোহার কি দোষ? যদি সোনায় ধরে মরচে রোগ।
যে যাজকের উপর বিশ্বাস করি, সে যদি না হয় উপযুক্ত যোগ্য-
তবে বিস্ময়ের কি আছে, "যদি অপরাধ করে কোনো অজ্ঞ"?
গীতসভাসদের মাঝে একজন দুষ্ট যাজক দেখলে পরে
লজ্জা হবারই কথা। একজন যাজক সত্য উপলব্ধি করে
সদাচরণের নন্দন দৃষ্টান্ত স্থাপনে তৈরি করে পল্লীসমাজ
এর লোকদের সৎ জীবনযাপনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা তার কাজ।
নিজ যাজক অর্থবৃত্তি অন্যকে ধার দেওয়ার পরে
আশ্রিত জনগণকে ভারাক্রান্ত বিপদগ্রস্ত করে
প্রার্থনা গীত গাইতে কিংবা পৃষ্ঠপোষক হওয়ার ছলে
ছুটতো না সে মৃতের উদ্দেশ্যে লন্ডনের সেন্ট পলে ।
কিংবা কোন দপ্তরে কোনো চাকরি খুঁজত না কোনোমতে
নিজগৃহে থেকে এলাকার অধিবাসীদের রাখত সৎপথে,
রাখত পাপমুক্ত এবং দেখত কেউ যেন পথভ্রষ্ট না হয়;
সে ছিল প্রকৃত ধর্মযাজক; বেতনভুক্ত কর্মচারী নয়।
যদিও সে পুন্য আত্মার অধিকারী এবং পবিত্রমনা
তবু সমাজের পাপী নিকৃষ্ট চরিত্রেদর করত না ঘৃণা
তার কথাবার্তায় দম্ভ কিংবা গর্ব পেত না প্রকাশ,
কিন্তু সে ছিল বিচক্ষণ ও দয়ালু ধর্মদাস
সৎ ব্যবহার এবং ন্যায় নিষ্ঠ আচার আচরণ দৃষ্টান্ত দ্বারা
তার কাজ সাধারণ জনগণকে স্রষ্টার প্রতি আকৃষ্ট করা
উচুমর্যাদা বা নিচুমর্যাদারই কোনো পাপী হলে অবাধ্য
সে যথাসাধ্য
করত তাদের তিরস্কার উপহাস;
তার মতো পুরোহিত কোথাও নেই আমার বিশ্বাস।
জাঁকজমক কিংবা শ্রদ্ধা নিবেদনের ধারতো না ধার
কিংবা ধোয়া তুলসীপাতা এমনও ছিল না ভাবের বাহার।
খ্রিস্ট আর দ্বাদশ শিষ্যের বাণী নিজে অনুসরণ আচার
তারপরে সে তাদের সেই বাণীসমূহ করত প্রচার।


এই যাজকের সাথে ছিল তার এক ভাই নাম প্লোমান
ঘাড়ে করে সারের বস্তা অনেক দিয়েছে টান।
ছিল সে সত্যবাদী কৃষক এবং প্রকৃত মজুর একজন
ধ্যানধানে ভিতর দিয়ে শান্তিতে করে দিনযাপন
আনন্দ বেদনা লাভ লোকসান কিছু বিচার না করে
মনেপ্রাণে গভীরভাবে সে ভালোবাসে তার ঈশ্বরে।
তারপর সে তার প্রতিবেশীদের অনেক ভালোবাসে
সম্ভব হলে গরীব প্রতিবেশীদের উপকারে আসে
খ্রিস্টের নাম নিয়ে বিনা পারিশ্রমিক কিংবা বিনা বেতনে
রাজি- প্রতিবেশীদের ধান ঝাড়তে, খাল-খন্দ খননে;
নিজে সে অনেক খাটত এবং পরিশ্রমে ফসল ফলায়ে
সৎভাবে আয়ের দশমাংশ কর দিত যথাসময়ে।
সে চলে হাতাহীন পোশাকে এক ঘোটকীর পিঠে বসে।
এক নায়েবমশাই, এক যাতাওয়ালাও ছিল এইদল তিনদশে।
এক আদালতের পেয়াদা, এক পেশকার আমাদের সাথেই
এক ভান্ডারী আর আমি ছিলাম, আর বেশি নয়, এই।