(রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম)ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ৮৭ থেকে ১০০ মোট ১৪ টি অনুবাদ।
মোহাম্মদ ডেভিড কৃষ্ণ বড়ুয়ার সৌজন্যে :-
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লার(১৯৪২)অনুবাদ-৮৭(R.120)
জগৎ মাঝে জীবন-পথে সতর্কতা সদা উচিত,
জগতের সব কাজে কথায় মুখটি বুঁজে থাকা বিহিত।
যাবৎ তোমার চক্ষু কর্ণ জিহ্বা দেহে থাকে বজায়,
পৃথিবীতে থাকবে যেমন চক্ষু-কর্ণ জিহ্বা-রহিত।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ- ৮৮(R.147)
প্রতি সকাল লালার মুখে শোভা কেমন দেয় শিশির!
কুঞ্জবনে বনফশা ফুল লজ্জায় তখন নোয়ায় শির।
সত্যি বলি সেই কুঁড়িদের দেখতে লাগে চমৎকার,
নিচোল দিয়ে জড়িয়ে যারা রাখে তাদের সব শরীর।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৮৯(B.151)
চতুদ্দিকে চক্ষু মেলে যতই তাকাই দেখি ধরায়
"কওসর"হ'তে ঝরণা নেমে বইছে যেন ফুল-বাগিচায়।
মরু আজি স্বরগপুরী,নরক মেনে হয়েছে দূর,
বস সুখে এই স্বরগে"হুর"-বদনী নিয়ে প্রিয়ায়।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯০(R.255)
প্রাণ হয়েছে কেবলি জল,হয়েছে হায়!হিয়া রুধির,---
পর্দ্দার পিছে গুপ্ততত্ত্ব যথার্থতা করতে জাহির।
ওহে!তোমার জ্ঞানের কাছে যুক্তি হত,আকাশ নত,
পরিব্যাপ্ত দুই লোকেতে,কিন্তু তুমি দুয়ের বাহির।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯১(R.10)
দেখছ নাকি পান-পেয়ালার কি মনোহর গঠন,
ভাঙতে তারে মাতালেরও মন করে না কখন।
কার বা দয়ায় উঠল গ'ড়ে হেন সুন্দর শরীর?
কার বা রাগে ভেঙে চুরে টুকরো হ'ল এমন?
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯২(R.30)
আর কত কাল জ্বালবি বাতি মসজিদেতে,গির্জায় ধূপদান?
আর কত কাল নরক ভয়ে,স্বর্গলোভে রইবি হয়রান?
বিধির কলম লিখেছে যা আদিম কালে ভূত ভবিষ্যৎ,
মুছবে না বা বদলাবে না কিছুতেই তার অণুপ্রমাণ।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯৩(R.54)
অযোগ্যের ঠাঁই রাখবে গোপন রহস্যটি সাবধানে,
ফাস ক'রো না ভেদের কথা কভু মূর্খদেরি স্থানে।
মনে রেখো কাজটি তোমার পরের প্রতি করছ যেটি,
অবশ্য তা তাদের হ'তে পাবেই তুমি প্রতিদানে।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯৪(R.55)
ক'রো নাক সুখের আশা,জীবন তোমার একটি দম,
ধূলি-কণায় মিশে আছে কায়কোবাদ আর বাদশা জম।
দুনিয়ার হাল আর তোমারি বাকি টুকুন আয়ুস্কাল,
স্বপ্ন কিংবা খেয়াল কিংবা ধোকা কিংবা একটি দম।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯৫(R.58)
কামনা আর খেয়াল পিছে ছুটিস যদি তুই কেবল,
সাবধানে,তোর জীবন হবে লক্ষ্যহারা আর বিফল।
দেখ্ রে ভেবে,তুই বা কেটা,কোথা হ'তে এলি তুই,
রাখ্ রে জেনে তুই কি করিস্,কোথা রে তোর গম্যস্থল।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯৬( R.59)
জীর্ণ মোদের জীবন দেখ কুঞ্জ ঐ যে ঊর্দ্ধ আকাশ,
জৈহূন নদী নিত্য ব'য়ে অশ্রু মোদের করছে প্রকাশ,
দোযখের ভয় তপ্ত আঙার বিফল দুখের দেয় পরিচয়,
ফিরদৌসের দোর জানালা সুখের মোদের দেয় গো আভাস।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯৭(R.60)
ভাগ্যে যদি ফুল না জোটে,কাঁটাই না হয় সইব মোরা,
নাইবা পৌঁছে আলোক যদি,আগুনেই নয় রইব মোরা।
যদিই না পাই খির্কা জামা,ভজন-কুটীর,পীর উপাধি,
ঘণ্টা গির্জা করল সম্বল,পৈতায় না হয় রইব মোরা।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯৮(R.64)
বলতে পার জ্ঞানের গাছে কোন কিছুই ফল না ফলে,
কেননা এই পথে যেতে সোজাসুজি কেউ না চলে।
শক্ত শাখা ত্যাগ ক'রে সব পল্কা শাখা ধরছে হাতে,
আজ গত-দিন,আগামী-দিন গণ আদিম দিনটি ব'লে।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-৯৯(R.77)
সেই প্রেয়সী যার কারণে হৃদয় আমার রয় ব্যথিত,
তার যে ওহো!অন্যের তরে বিরহে প্রাণ জর্জরিত।
নিজের রোগের চিকিৎসাটি কেমন ক'রে করব আমি,
যারে ভাবি চিকিৎসক মোর,স্বয়ং পীড়ায় সে-ই পীড়িত।
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর (১৯৪২)অনুবাদ-১০০(R.83)
হায় রে!যারা জ্ঞান সাধনায় জীবন পণে করছে যতন,
আফসোস এই যে গাভী ছেড়ে দামড়া তারা করছে দোহন।
বরং পর মূরর্খেরি বেশ ফেলে দিয়ে জ্ঞানীর পোষাক,
হাট বাজারে শাকের দামেও বিকীয় নাক জ্ঞানটি এখন।