তোমাকে আর কোনোদিন ভালোবাসতে বললে, নির্বাসনে যাবো।


একটা টানা ঝুলবারান্দা থাকবে, বড় বড় ধানের ডুলী রাখা মাচা আর মেঝেতে শালকাঠের ইয়া-বড় সিন্ধুক ওয়ালা মেঝের একপাশে আড়াআড়ি পেতে রাখা বড় চৌকি।
চৌকাঠ পেরিয়েই টানা বারান্দা, তুমি হাত ঝুলে দাঁড়িয়ে থাকবে, উত্তর দিকে মুখ করে। ও দিকে দুটো রাজহাঁস তেড়ে যাচ্ছে আমাদের ছোটোবোন বিলুর দিকে। বিলু বড় একটা লাঠি নিয়ে ভয় দেখাচ্ছে ওদের। আর তুমি, তাই দেখতে দেখতে হেসে ফুলখড়ি ঝরাচ্ছো পুরোনো বারান্দায়।


তোমার লম্বা বিনুনি, পিঠবেয়ে নেমে আসে, আর বিকেলবেলা শালিকের দল, ঘরে ফেরার ব্যস্ততায় দেখে নেয় পৃথিবীর সৌন্দর্য।


ঐ যে বাড়ির পাশের বড় পুকুরটার পানির মতো স্বচ্ছ টলমলে তোমার চোখ, চোখ থেকে ভালোবাসা নামিয়ে এনে শরীরে, নকশীকাথায় তোমার আমার রাত্রিনিবাস ভ্রমণবৃত্তান্ত লিখে রাখে অক্লেশ জঠর।


আমাদের আলিশান বাংলোর দরকার নেই। উঠোনজুড়ে ধুলিকণার সাথে বেড়ে ওঠা আকাশের নীচে ছায়াময় দুটো লিচুগাছ, মাচান বসানো লাউগাছের লম্বা ডানায় ভর করে নেমে আসা পিঁপড়ের ঝাক, টুঁই ফুঁড়ে ঝুলে থাকা বাবুইয়ের ভালোবাসা আর কলার ভেলায় ভাসা বারো মাসে আট টি বান। এই কি কম বলো?


অথচ, কোন এক অলক্ষুণে মাঝরাত পেরিয়ে, তোমার হাতের কাছে জমা করা আমার প্রেম, অক্লেশ জঠরে বাঁধতে চায় না দেখা সেসব দিন।
পাশ ফিরে এসব স্বপ্ন তখন অস্বীকার করে বসো...


আমার স্বপ্নেরা তখন মৃত হয়ে যায়।