মাহবুব তারেক  
২৭ জুলাই ২০০৮, চীন।  


একজন কবি এসেছেন…


কবি বিশুদ্ধতার কথা বলতে এসেছেন,
সততার  কথা বলতে এসেছেন,
এখানে ঘৃণা ও ত্রাসের বদলে
নিগাঢ় প্রেমের গল্প বলতে এসেছেন ।


কবি এখানে কোনো নিখুঁত টার্গেট প্র্যাক্টিস করতে আসেননি,
এখানে হাসনাহেনা, দোলন চাপা কিংবা রজনীগান্ধার চাষ করতে এসেছেন ।


কবি এখানে কোনো চটকদার বিজ্ঞাপন দেখাতে আসেননি,
তার বদলে শহরের সমস্ত বিলবোর্ড ভালোবাসা ও বন পলাশের কাব্যে ছেয়ে দিতে এসেছেন ।  
কবি কোনো কর্পোরেট অফিস, মাল্টি কমপ্লেক্স অথবা  স্কাইস্ক্র্যাপার করতে আসেননি,
প্রতিটি জনপদে শরতের নির্মল নীল আকাশ চেয়ে নিতে এসেছেন।
গোলাপের পাপড়ি ও শিউলি ফুলের স্নিগধতা দিতে এসেছেন।

কবি এখানে কোনো জল্লাদের ছুরিতে শান দিতে আসেননি,
বরং বিথোফেনের সিম্ফনি শুনাতে এসেছেন।
কবি কোনো দজ্জালদের কথা বলতে আসেননি,
কবি বলতে এসেছেন “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি তা ভুলিতে পারি”।
কবি কোনো রক্ত পিপাসু হায়েনাদের কথা বলতে আসেননি,
কবি এসেছেন একাত্তরের যীশুদের কথা বলতে।
কবি এখানে এসেছেন অনুভব করতে মৃত্যুর আগে এক একজন মুক্তিযুদ্ধাকে কতটা নির্মম টর্চার করা হয়েছিল।  
তার পরবর্তী প্রজন্ম কবি, তার হিসেব চুকে নিতে এসেছেন।


কবি এখানে এসেছেন আব্দুল হাকিমের সরলতায় “যে সবে বঙ্গেতে জন্মে হিংসে বঙ্গবাণী “তার জন্ম পরিচয়ের ফয়সালা  করতে।
কবি এসেছেন নজরুলের দ্রোহের শপথে,
কবি এসেছেন এখানে রবীন্দ্র নাথের লাবন্যকে খুঁজে নিতে,
কবি এসেছেন শহীদ কাদরীর “তোমাকে অভিবাদন, প্রিয়তমা” শুনতে ।


এখানে কোনো ভিনদেশি গানের অশ্রাব ধুন শুনতে আসেননি     কবি এসেছেন লালন বিরহের প্রকৃতিজ আবেদনে ,
আব্দুল করিমের বসন্ত বাতাসের গন্ধে ,
আব্দুল আলিমের ভাটির টানে।

কবি এসেছেন অজস্র মানুষের ভীড়ে প্রিয়তমার মুখ ফিরে পেতে
কবি এসেছেন  হেমন্তের বৃষ্টি শেষে মাটির সোঁদা গন্ধ নিতে।
কবি এসেছেন প্রিয় মাতৃভূমিকে  বার বার ভালোবেসে হেটে যেতে সবুজ ফসলের মাঠ।