আমার জন্ম ১৯৭১, ১৬ই ডিসেম্বর।
মাকে দেখিনী আমি জন্মের পর
আমার বেড়ে উঠা বিদেশের মাটিতে
দত্তক মা বাবার কাছে।
খুব অল্প বয়সেই জেনেছিলাম
ওনারা আমার কেউ নয়।
আমার শেকড় আছে এই বাংলায়।
এখানকার ভেজা মাটি সবুজ ডাঙ্গায়,
বছর বছর ছুটে আসি এই শ্যামলের ছায়,
মনে হয় খুজে পাই আমার নিজের পরিচয়।
বাংলার ধুলা মাটি মাখত মা তারি গায়।
এই জল মাটিতে আমি মায়ের সুবাস পাই।
বসে থাকি আমি ঐ অশথ্বের ছায়,
মনে হয় মায়ের আঁচল জড়িয়েছি পরম উষ্ণতায়।
দিগন্তজোড়া সবুজ ক্ষেতে বাতাস যখন দোল দিয়ে যায়,
মন হয় মা যেন ছিল ঐ প্রান্তরে তার কিশোরী বেলায়
শুনেছিলাম মায়ের বাড়ি ছিল বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গে।
ট্রেনে করে সে সময় ঢাকা থেকে যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে পাকিস্তানী হায়েনাদের কবলে পড়ে,
মাকে নিয়ে গেল ওদের ক্যাম্পের ভিতরে,
দীর্ঘ আটমাস নিদারুন যন্ত্রনা ছিল তার শরীরে,
সময়ের আগেই আমি ভূমিষ্ট হই,
আর কিছু আমার জানা নেই।
তবুও আমি এই বাংলায় খুজে ফিরি আমার শিকড়
এখানকার মাঠ ঘাট নদী নালা সবুজ প্রান্তর।


জানি কোনদিন জানবনা মায়ের পরিচয়
মায়ের নাম লেখা রবে বাংলার স্বাধীনতায়,
আমার পরিচয়, ঐ লাল সবুজের পতাকায়।