সাত বোনের মাঝে মিনতি সবার প্রিয়
পড়াশুনায় মেধাবী সেকথা সবাই জানত
গানে-ছন্দে কথাতে সে ছিল বড়ই নিপুন
পিতার স্নেহের কন্যা, ছিল তার সব গুণ
ধীরে ধীরে মিনতি পরিণত হইল-
পিতার চিন্তার আর অবধি না রইল
অবশেষে একদিন পাত্র মিলে গেলো
পাত্র থাকে বিদেশে মাস্টার বলে খ্যাত
পিতা-মাতা দুজনে করিল মন স্থির
এবার দেবেন বিয়ে লগ্ন হবে না অতীত
একথা শুনে মিনতি মনে মনে কাঁদে
পৃথিবীর এই নিয়ম কেনই বা আছে
ভাই-বোন, বাবা-মা সকলকে ছেড়ে
যেতে হবে সব মেয়েদের ঘরবাড়ি ছেড়ে
কেমন হবেন পাত্র তাহা নাহি জানি
জীবনে কি আছে জানেন মাতারানী
গাওঁ ছিল ছোটো সজলা নদীর ধারে
স্নান করিতে নিত্য যেত সেই ঘাটে
পথে যেতে সবাই চায় তার পানে-
লঞ্জা পায় মিনতি তার নিরব প্রাণে
অবশেষে দিন আসিয়া পড়িল
বিবাহ কার্য সুসম্পন্ন যে হল
এল মিনতি বিদেশ ভিভূঞে
ভাইবোনের কথা পড়িল তাহার মনে
দেখে মিনতি হেথায় যা সে ভেবেছিল
তাহা নয় মিছামিছি প্রতারনা যে হল
স্বামী তার মাস্টার নামে খ্যাত
উপার্জন করে যাহা সে এনে দিত
কোনোক্রমে দিনযাপন তাদের যে হত
মিনতি স্বামীরে বলে ওগো প্রাণনাথ
আমিও কাজে কর্মে দেব তোমাদেরই সাথ
স্বামীরে করে মিনতি সহযোগিতা
মনের খুশিতে মিনতির লাগেনা ব্যথা
সময়ের সাথে মিনতির পরিবার বাড়ে
ধীরে ধীরে ভালবাসা যায় অস্তাচলে
একে একে মিনতির মনে পড়ে যায়
শৈশবের যে সুখ তাকে ভোলা নাহি যায়
ভাই-বোন মা-বাবা সবার সাথে
জীবন ছিল অতি মধুর সবার সনে
অতি কষ্টে মোটামুটি দিনগুলি যায়
মিনতি সদা ভাবে কি হবে উপায়
সময়ের ধারা মিনতি খেটে যায় সারা
স্মামী নাহি বোঝে, মিনতির ব্যথা
মিনতি যত সুধাই, স্বামী থাকে চুপ
নিজের ব্যাথা বুকে চেপে বলে ওগো প্রিয়
সবাইকে পারি আমি ত্যাগ করিতে,
তোমার হাসি চাই নয়ন ভরে দেখতে
মিনতির কথায় স্বামীর হৃদয় ভরিয়া যায়
চোখের পলকে মিনতিকে বুকে টানিয়া লয়
অশ্রু জলে মিনতির দুই গাল ভরে
দুঃখের মাঝে সুখ মিনতি খুঁজিয়া ফেরে