চারিদিক কুয়াশার চাঁদরে
ডুবিয়া আছে মাঠ, ঘাট, প্রান্তর
মাঝ রাতে অমাবস্যার অমানিষা
আকাশ জুড়িয়া তাঁরাদের মেলা
বসে নি আজিকে।।
মধ্য গগণে চাঁদের অস্তিত্ব
চিহ্নিত করিতে পারিতেছিনা কোন ভাবেই।।
আমি তো জ্যোর্তিরবিদ নই
যে চন্দ্র, সূর্য আমার নখ দর্পনে থাকিবে
আমি যখনই চাহিবো
তাহাদের ডাকিয়া আনিবো।
তোমার বাড়ির অদূরে যে কালিমন্দির
তাহারই সামনে দাড়াইয়া আছি আমি।
তুমি এখানেই থাকিতে বলিয়াছিলে।
বলিয়াছিলে তুমি এখান দিয়া আসিতে পারিবে না।
ভয়ে মরিয়া যাইবে।
জানো টুনটুনি
আমারও কিন্তু চড়ম ভুত ফোবিয়া।।
তবু ও তোমার কথায়
প্রতিবাদ করতে পারি নি।।
এ নাকি জ্যান্ত কালি
যাকে, তাকে; যখন, তখন
আছড় করিয়া বসে
তবু ও দাড়াইয়া আছি
গা ছমছমে মাঝ রাত
অন্ধকারে চোখে তারা দেখিতেছি
আকাশ তারা শূন্য।।
তোমার আমার ভালবাসা চলিতেছে
সে বছর দেড়েক হবে
মাস খানেক আগে
তোমার পরিবার জানিতে পারিলো বিষয়টা
তুমি উচ্চ বংশীয় ব্রাহ্মন
হিন্দুর মেয়ে
আমি খেটে খাওয়া মুসলমান
তাই তাড়াহুড়া করিয়া
তোমার বিয়ের দিন ঠিক হইয়া গেল
কাল তোমার বিয়ে
তুমি বলিয়াছিলে আসিও মাহমুদ
আমি তো ঠিকই আসিয়াছি টুনটুনি
তুমি কেন এলে না।।
চার বছর থেকে কালিমন্দিরের
সামনে বসে আছি।।
মানুষ এসে কালিমাকে পুজো করে
আমাকে এসে মারে
চলে যেতে বলে অন্য কোথাও
বাচ্চারা ঢিল ছোড়ে
হাত, পা কেটে যায়
মাথা ফেটে রক্ত পরে
তবু আমি বসে থাকি
মন্দিরের পুরোহিত বাবু
খুব ভাল
পুজোর দিন আমাকে
ভালভাল খাবার দেন
মানুষ দেবীকে
খাওয়াতে যা আনে
তাই আমার খাবার।
আমি অর্ধেক খাই
অর্ধেক রাখি।
তুমি খাবে তাই
জানো টুনটুনি আমার
খাবারের বস্তাটানা বোঝাই হয়ে গেছে
তুমি কবে আসবে টুনটুনি
কবে পাব তোমার দেখা?