জগতের নিয়ম কতই না হাসায়!
মনুষ্যকূল কহে গাছেরে-
ওহে গাছ, তুমি দুঃখ দিয়াছো মোরে।
আমার স্থান করিয়া দখল গড়িয়া নিলা নিজেরে।
গজাইলা ডাল,
এ কি হাল!
জুড়িয়া বসিলা অস্থানে?
ঝড়ের তোড়ে ভাঙলে পরে
পরবি মাথার উপরে।


গাছ কি বলবে, হায়!
বলে গাছ, মনে মনে-
নিজ খাদ্য বিলাইলাম জনে জনে।
ছায়া দিলাম ক্লান্তজনের তরে।
ওষুধ দিলাম নিজেরই অঙ্গ ছিঁড়ে।
তোরা বানাতে তোদের শহর-
নির্মূল করিস আমার গতর,
ভালোবাসি বলে বাঁধিনি কভু, দিয়াছি নিজেরে বিসর্জন।
তবু তোরা বলিস ভালোবাসা নাকি শুধু তোদের অর্জন।


আমি যে বড্ড অসহায়!
চেয়ে চেয়ে দেখে যাই-
মোরে করে ব্যবহার দেখাস লোক দেখানো বড়াই।
তোদের গৃহে সাজাইয়া আমায়
বলিস কিনা ভালোবাসিস। কোথায়?
যখন আমারই ফুল ছিঁড়িয়া বিলাস তোদের প্রেমিকারে,
বলিনিতো তবু তোমার সাজে কষ্ট দিয়ো না মোরে।
ভালোবাসি বলে সাজাই তোরে নিজ কষ্টের জোড়ে।


আমি নির্বাক,
হই হতবাক-
তোদের স্লোগান শুনে।
ভালো তো বেসেছিস তোরা
শুধু নিজের মনকে শুনে।
নিজের চাহিদা যদি হতো ভালোবাসা,
দু'দিনেই মিটিতো সকল আশা।
ভালোবাসা তো বিসর্জন,
বিনা অজুহাতে নিজের আত্মসমর্পণ।
ভালোবাসা তো দায়িত্ব,
নয় কো তা নিজের কৃতিত্ব।
ভালোবাসি বলে খুঁজি তোদের হাসি,
আর তোরা কান্না পেলে বলিস, আমি নিজের মায়ায় ভাসি।


গাছ যে তবু ভালোবেসে যায়!
মানুষে আর গাছে ভেদ যে এই একটাই-
মানুষ কষ্ট দিয়ে সুধায়,
সে নাকি অনেক কষ্ট পায়।
আর নির্বাক গাছ কষ্ট সয়ে অবাধে ভালোবেসে যায়।