রচনা কাল – ২৬-০৮-১৯৭৭


তোমার আর্থিক কষ্টে তুমি চিন্তান্বিত,
অথচ চিন্তা করেও সারাদিন রাত
কোন সমাধানে পৌঁছুতে পারনা।
শুধুই ভাবনার পাহাঢ়ের চুড়ায় পৌঁছে
হঠাৎ নীচে গড়িয়ে পড়।
তোমার হৃদয়, তোমার বিবেক
লাঞ্ছিত হয় বার বার; তুমি অনুধাবন কর,
কিন্তু যারা তোমা থেকে দূরে বহুদূরে
তারা একটুও টের পায়না,
অথচ আশে পাশেই অবস্থান তাদের।
তোমার দুধের বাচ্চা ক্ষুধায় যখন
তোমার বউয়ের শুকনো স্তন মুখে নিয়ে
অবিরত চীৎকার করতে থাকে;
তখন কারও প্রিয়া বিরক্ত হয়ে
তোমার সন্তানের চৌদ্দ পুরুষের মুন্ডুপাত করে।
আর তুমি? তুমি কি বোবা বনে যাওনা?
ঈদের নামায পড়তে মাঠে গিয়ে দেখতে পাও
তোমার পাঁচ বছরের সন্তান
বেদনার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
কোন বিত্তশালীর ছেলের ঝলমলে পোশাকের দিকে।
অতর্কিত সে দৃশ্য কি তোমাকে
অদৃশ্য চাবুক মেরে আহত করে দেয়না?
তুমি সে দৃশ্যে শুধুই
আঘাত পাও যা ভাষায় অবর্ণনীয়!
বিত্তশালীর দুর্ঘটনায় সামনে গিয়ে দাঁড়াও;
সংকট কেটে গেলে –
তারা তোমায় দু-দশ টাকা দিতে চাইলে;
মরা বিবেকের খাতিরে
সবিনয়ে তা নিতে না চাইলে,
সে হিংস্র বিত্তশালী বেশী আদিখ্যেতা
না দেখানোর জন্য কঠোর ভাবে ধমকে দেবে।
তুমি কি তখন ভেতরে ভেতরে
অসহায়ের মত গুমড়ে গুমড়ে কাঁদনা?
কিন্তু ওরা বলে সব অভিনয়; ন্যাকামি!
তুমি কি বোবা বনে যাওনা এহেন মন্তব্যে?
তুমি নির্বাক পুতুল,
চিরতরে হারিয়ে গিয়ে সবাকদের চলতে দাও;
আরও উদ্ধত হতে দাও।
তোমার বিবেক কি একটুও বলেনা,
আমি আছি তাই ওরা টিকে আছে!
তুমি দৃপ্ত কন্ঠে ঘোষণা করে দাও,
আমি সবাক; আমিও মানুষ!