রচনা কাল - মে ১৯৭৫


তোমাদের তিনজনকে বলছি –
অবশ্য একই বয়সের;
কিন্তু ভিন্ন পরিবেশের।


তোমাকে বলছি –
তুমি গরীব তাইনা?
কিন্তু কেন?
কি বললে, কপাল?
শুধু কপালের ‘পরই বসে আছ,
বেশ বুদ্ধিমান তুমি!
তোমার পাওনা শুধুই ধিক্কার।
কাজ না করে সব পেতে চাও,
কিন্তু তোমার কর্তা মূর্খ নয়,
বার্ধক্যের কোঠায় পৌঁছেছ
তুমি মিথ্যে!


তুমি নাকি মধ্যবিত্ত?
বেশ ভাল।
এহেন কষ্ট কেন বাছা?
আর্থিক টান পোড়েনের মাঝে
পূর্ণ ভাবে চলতে পারো?
তাতো বলবেই;
যত দোষ শুধু মালিকের!
কেন, মালিক কিছু দেয়নি তোমায়?
বঞ্চনা কোরনা,
মালিক সজাগ কিন্তু।
বিবেকহীন! এভাবেই চল,
শেষ লগ্নে পূজা দিলে
সে প্রেম গাঢ় হবে কেন?
সময়ে যা করনি
অক্ষমতায় তাই করতে চাচ্ছ,
কিন্তু সে তো দেবেনা।
তুমি কি দেখনি –
তোমার আগের অনেকে চলে গেছে,
তুমি কি দেখনি;
তোমারই ঔরসজাত সন্তান-সন্ততি
তোমাকে উপদেশ দেয়।
কিন্তু তুমি তো বেউকুফ
তাই তোমার সত্যকে অপমান করলে।
এখন শুধু প্রহর গোন,
যে প্রহর তোমায় পৌঁছে দেবে
দূরে অনেক দূরে!


অবশেষে তুমিও শোন –
রঙিন চশমা ছেড়ে
সাদা কাঁচের চশমা ধরেছ,
রঙ আর খাপ খায়না কেমন?
কিন্তু তুমি তো ধনী,
রঙই যে তোমার কাছে মহামূল্যবান।
বয়স বেড়েছে তাতে কি,
রঙের পশরা সাজিয়ে
আবার কেন তা ছেড়ে
বেরঙ হলে বলতো?
সত্যি ভারী অবাক কাণ্ড।
মহামূল্যবান গাড়িতে চলেও
আর শান্তি লাগেনা কেন?
তোমার পরিচালক বড় নিষ্ঠুর কি বলো!
স্টিয়ারিং ধরে আনমনা হয়োনা
কেননা ওতে দুর্ঘটনা ঘটার ভয়।
তোমার হিসাবে যাতে অমিল না হয়;
সে দিকে লক্ষ্য রেখেছ চলেছ এতদিন।
মনে হচ্ছে ইদানীং তুমি হাঁপিয়ে উঠছো,
যতই তুমি বল্গা টেনে ধর,
জেনো; প্রায়শ্চিত্ত তোমাকে করতেই হবে!