কিছু আহত পাখি এখনো তার অপেক্ষায়
বহুদিন তার দেখা নাই, অনেক দূরে চলে গেছে সে...

পাখিদের রাজ্যে সবচেয়ে কাতর পাখিটার চোখ আজও ভেজা
সারাক্ষণ চোখে কান্না নেমে আসে
মুছতে গেলেও চোখের পানি ফুরোয় না কখনোই
বরং স্রোতধারার মতো গড়িয়ে পড়ছে

সন্ধ্যে নামার কিছু কাল পরে— চোখের জল যেন গাল বেয়ে চিবুক ছোঁয়
পৃথিবীর সুখী মানুষেরা তখন ঘুমায় নিজ নিজ বাড়িতে
কাতর পাখিটা ঘুমাতে পারে না, ঘুমাতে পারছে না তার অপেক্ষায়
তার কথায় পাখিটার ঘুম হতো রোজ
চোখের পাতায় ঘুম এসে যেতো তার কবিতা শুনতে শুনতে
তার কথাতে চিড়া না ভিজলেও, মন যে তার ভিজে যেতো সহজেই
আজ মনের চেয়েও চোখ যে ভীষণ ভেজা
চোখের কান্না কী করে থামবে এ চিন্তাও আসে না মনে!
কারণ— মানুষটা এখন অনেক দূরে...

যে চলে গেছে, সে  প্রিয়তম মানুষ ছিল
যে চলে গেছে, তার কন্ঠে জীবন ছিল
যে চলে গেছে, তার বুকে কান্না রাখার জায়গা ছিল
যে চলে গেছে, তার লেখায় সাত সমুদ্র তেরো নদীর ঢেউ ছিল
যে চলে গেছে, সে পাখিগুলোর সকাল বেলার গান ছিল
আর সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে দেখতে  বাড়ি ফেরার আহ্বান ছিল
তার মতো আর কেউ ছিল না
কারণ— সে কবি ছিল
তার কবিতায় বাঁচার আশা ছিল, এক মহাকাল ছিল
এক জীবন পাড়ি দেওয়ার এক মহা-সমুদ্দুর ছিল

আজও আকাশে কতো পাখি ওড়ে!
উড়ছে ডানা মেলে, নীল আকাশে— দূরে অদূরে, অসীমের সীমান্তে
তবু কিছু আহত পাখি যে বাতাসে নিজেদের চিকিৎসা করাতো, ওদের এখন কী হবে— ওরা কি এখনো গান শোনে?

এই ভেবে কবির চোখে ঘুম নেই আটাশ বছর ধরে