(ফরিদপুর বারের এডভোকেট দের স্মৃতির স্মরণে )
বাবার খুব প্রানের বন্ধু ছিল এড .মাঈনুদ্দীন,
চাঁদের মত দ্বীপজলতো চেহারায়, ছিল তার এলমেদীন,
ক্রমেই চাঁদ সরে যাচ্ছে এখন পৃথিবী থেকে,
একদিন সত্যিই দেখা যাবে না, দিন ও রাত্রির ভিড়ে,সমুদ্র নদী অথবা লেকে!


আহা!কি প্রগাঢ় ব্যক্তিত্ব ছিল অ্যাড. সৈয়দ মোশারফ
ভীষণ বিনয়ী তিনি যেন এ ধরনীর আশরাফ।
কবি ফররুখ আহমেদের জামাতা ছিলেন প্রকাশ করতেন তার শোক,
বারে এলে খেতে দিতেন ঠাকুরের রাজভোগ!


কোথায় যেন হারিয়ে গেছে এড. সাখাওয়াত এড.শাহাবুদ্দিন,
আশার নুন ভাতে, বিপদের বন্ধু ছিল ঘন দুর্যোগ দুর্দিন,
যাযাবর মেঘ ছেড়ে চলে গেছে দূর নক্ষত্রের দেশে,
আড়ালে আবডালে তাদের কথা মনে এলে চোখেতে পানি আসে


মানুষের খুব কাছের বন্ধু ছিল, এড. রোকনুজ্জামান!
দেখিয়াছি আমি তাহাকে স্বপ্নে, বহুবার বহুদিন।
বাবা অসুস্থ হলে খাবার পাঠাতেন হসপিটালে
এখনো স্মৃতিতে তার ভদ্রতা আতিথিয়তা ভাসে কালের রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে,


বড় আদরের মামা ছিল এড. মাকসুদ
সে যেন ছোট ছোট নদী আর পুকুরের বেদনার বুদবুদ,
সেও পৌঁছে গেছে নদী পার হয়ে ওপারের খেয়া ঘাটে
বাবাকে নিয়ে ঘুরতে যেতো, সেই চিরচেনা বৌঘাটে


নিঝুম ঘুমের বাড়িতে ঘুমিয়ে আছে মৃত্যু দের পাশে,
হায় এড. শামসুদ্দিন মোল্লা,বিখ্যাত মানুষ আপনি চলে গেছেন আকাঙ্ক্ষার আবেশে,
নিরিবিলি ঘুমিয়েছে এড. ছরোয়ারজান মিয়া, অ্যাড. আদেলউদ্দিন হাওলাদার,
মনে হয় দাঁড়িয়ে একটি মোনাজাত করি এই পৃথিবীর পর



সূর্যের আলোকিত পৃথিবী দেখে ক্লান্ত নেমেছে চোখে,
তারপর মিশে গেছে সন্ধ্যার বিষন্ন কালো রং পৃথিবীর শোকে
যৈবনের লাবণ্য সময়ের শ্যাওলায় ভেসে গেছে বহুদূর,
ফিরে আসবেনা আর এড. বাকাউল,এড. আমিরুজ্জামান চুন্নু কবরে ঘুমে বিভোর


মনে পড়ছে এড.আবু আলম,এড. হামিদুল হক ঝন্টুর স্মৃতি
পৃথিবীতে খুব কমই এমন ভদ্র মানুষের আবির্ভাব ঘটে,আহা বসন্তে পাতা ঝরে এইটাই রীতি
কতদিন দেখিনা এড.আব্দুর রাজ্জাক,এড. খলিল ঠাকুর
শিক্ষানবিশ আইনজীবী দের শিখাতেন যেন মমতার পুকুর।


আমিও আইনের ছাত্র ছিলাম শিক্ষা দিতেন অ্যাড.মুজিবুর রহমান,
বাবার নাম ধরে আলী বলে ডাকতেন হৃদ্রতা ছিল বুকেতে বহমান,
রোদ্রে তার মুখ জ্বলজ্বল করত ছিল অপূর্ব পাঠদান,
তার লেকচার কানে বাজে জুরিসপ্রুডেন্স ল মোহামাডান,


বহু এড. শিশিরের কুয়াশায় হারিয়ে গেছে তাও বহুকাল
এখন কুমার নদীতে ভাসে নীল বেদনা বাওরে এখন পদ্ম ফুলের আকাল,
যে কজন বাবার বন্ধু বেঁচে আছে, অ্যাড. সুবল সাহা,অ্যাডভোকেট শাহজাহান,
তাদের কাছে যেয়ে গল্প শুনি এড. আব্দুল আলী মৃধার ফিরে পাই প্রাণ ।


আঁধারে আলো জ্বালিয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে জনম জনম
ভীষণ ধৈর্যশীল সভ্যতা ভব্যতায় আবৃত এড. শফিউল আলম
সব সাথী চলে গেছে পড়ে আছে বেদনার শূন্য হাত ,
সাহসী মাঝির মত দাঁর টেনে গেয়ে যায় জীবনের ধারাপাত


এখনো মক্কেল এলে,রুপালি মাছ উঠে আমাদের বালুচরে,
অথচ মৃত্যু দের মত জুনিয়রদের বুঝেনা, যদিও তারা চলে গেছে অতি সুদূরে,.
এখনো বহু সৎ আইনজীবী আছে, ভবিষ্যতে আরও আসবে থাকি আশায়।
বাবার মত এখন ভাবি, মনে হয় আমিও নেমে পড়ি এই পেশায়,


আহা কতো আইনজীবী চলে গেছে, তারা ছিলো আমাদের সামিয়ানা,
সৎ আইনজীবীরা কখনো অন্যায়ের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে না৷
আজ অনেকেই এই মহান পেশার অবমাননা ডেকে এনেছে,
অথচ মৃত্যুরা কত কষ্টে কত যত্নে, কত মমতায় বিচারালয়ের সিড়ি বাঁধিয়েছে