মা তোমাকে যদি খুঁজে পেতাম
প্রয়োজনে বিদ্যাসাগরের মতো দামোদর পার হতাম,
জানি এ জনমে আর দেখা সম্ভব না,
তুমি হয়ে থাকলে আত্মার কষ্ট অবলা নীল বেদনা।


মা তোমাকে যদি খুঁজে পেতাম,
যদি বায়েজিদ বোস্তামীর মত সারারাত জল নিয়ে দাঁড়াতে হতো তাও দাঁড়িয়ে থাকতাম,
জানি কখনও আর ফিরে আসবেনা,
তুমি হয়ে থাকলে পাহাড়ের অন্তহীন কান্নার ঝর্ণা


মা তোমাকে যদি খুঁজে পেতাম,
পিতৃপুরুষের ভিটায় মেঠোপথ ধরে তোমাকে নিয়ে বেড়াতে যেতাম,
হঠাৎ দূর নক্ষত্রের মাঝে কিভাবে হারিয়ে গেলে,
তুমি হয়ে থাকলে কল্পনার ভোরের তারা ঢেউয়ের দোলে।


মা তোমাকে যদি খুঁজে পেতাম,
মনে হয় শীতের উঠোনে তোমার সাথে রোদ্দুর পোহাতাম,
জানি হারানো সবুজ মাঠে লুকিয়ে আছো,
তুমি হয়ে থাকলে পারিজাত পাখি কোথায় যেন হারিয়ে গেছো।


মা তোমাকে যদি খুঁজে পেতাম,
আবার তোমার শিয়রে বসে অগণন দুঃখের শোলক শুনতাম,
হায়!এত কল্পনায় বুননো নকশি কাঁথা,
তুমি হয়ে থাকলে দিগন্তের বনভূমির ঝরাপাতা।


মা তোমাকে যদি খুঁজে পেতাম,
হয়তো সাহারা অনায়াসে হেঁটে পাড়ি দিতে পারতাম,
জানি এ ধুলোর পৃথিবীতে তুমি আর আসবে না,
তুমি হয়ে থাকলে আমাদের শরীরের স্মৃতির জামা আহা সে কি নীল বেদনা।


মা তোমাকে যদি খুঁজে পেতাম,
দুপুর রোদে গাছের ছায়ায় জিরিয়ে, কাবার পথে হাঁটতাম,
জানি লন্ডভন্ড এই সময়ে তুমি শুনবে না ডাক আমার,
তুমি হয়ে থাকলে তোমার ফেলে আসা উদ্যানে কথার কবুতর


মা তোমাকে যদি খুঁজে পেতাম,
তোমার গড়া স্কুলে তোমাকে দিয়ে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করতাম,
সোনালী ডানার চিলের মত উড়ে গেলে চির নীলিমায়,
তুমি হয়ে থাকলে কবিতার বর্ণমালা আমাদের চিরচেনা আঙ্গিনায়