নির্জন রাত্রিতেও অখন্ড অনন্ত দুঃখ জেগে থাকে,
কালের  কুহুর থেকে হু হু করে উঠে মনে পরে মাকে।
ফুরায় না কোনদিন, মুছেনা হৃদয়ছিড়া মমতার বন্ধন,
মা-বাবা ভাই-বোন রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ আত্মীয় স্বজন।


যত দূরে যায় পাহাড়ে পর্বতে এমনকি রোদের দেশে,
বেদনার নীল কড়ি বিষন্ন চোখে যখন হাতে আসে  ।
মুদ্রাগুলো তখন চকচক করে বৃষ্টির ফোটার মত,
আহা প্রবাস   থেকে কত মুখ ভেসে ওঠে প্রিয়জন যত।

এইসব রেমিটেন্স যোদ্ধাদের বুকেও যে পিপাসা আছে,
আহা বসন্ত আসার আগেই বহু ফুল ঝরে গেছে।
বিবর্ণ ফ্যাকাসে পাতার মতো মলিন চেহারা,
কতদিন দেখেনি সন্তানের মুখ থেকে যায় অধরা।


সমুদ্রের জলে যেমন ঢাকা থাকে নীল শেওলা,
এইসব প্রবাসীদের  কষ্ট ভাসে বেলা অবেলা।
সেই নদী, পুকুর পাড়, পাতাবাহারের  রঙের মতই নিজ গ্রামে,
সব ধুলো ঘাস ফেলে পরের দেশে ঘাম ঝরায় পানির দামে।


পরবাসে  মেহনতী মানুষের মূল্য পদ্মপাতার জলের মত
যাদের ঘামের মূল্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে প্রগতি যত।
তবু হেমন্তের নবান্ন উৎসবে, সাময়িক প্রশান্তির আশায়,
দেশে ফিরে সব আশা ফিকে হয়ে যায়।


শুয়োরের মতো আচরণ করে কোন কোন এম্বাসি,
অমর্যাদার সব যাত্রা যেন নিজ দেশের এয়ারপোর্ট এজেন্সি।
মনে হয় বিদেশ বিভূর থেকে ফিরেছে আধুনিক দাস,
এসব অসভ্যতা কবে শেষ হবে কবে আসবে বসন্ত বাতাস।


অকালে ঝড়েছে কত শ্রমিকের প্রাণ খুলেছে মৃত্যুর দোর,
বহু সময় পরে আছে লাশ হিম ঘরে, কেউ রাখেনি খবর।
মৃত্যুর আগে কত কথা বলার ছিল, বলতে পারিনি আহা,
এক চামচ পানি ও পাইনি , আপনজনের সঙ্গে হয়নি দেখা।