এই হৃদয়ে বাজছে আজও কোপাই নদীর সুর,
ভালোবাসার বসত ভিটে মনটানে লাভপুর।
ছিপছিপে তার গায়ের গড়ন দৃষ্টি মনোহর,
প্রতি ঘাটের মাতাল হাওয়ায় কোপাই স্বনির্ভর।


গ্রীষ্ম এলে বুক ফেটে যায় হাঁটুর সমান জল,
শীর্ণ বুকে খেলায় মাতে খোকাখুকুর দল।
বর্ষা মেয়ে ছন্দ তোলে— যেনো নূপুর পায়,
আমার ভেতর একটা কবি খুব কাঁপে লজ্জায়।


পড়ছে মনে— কাহারপাড়া, সেই অমলিন ঢং,
দাওয়ায় বসে পা দুলিয়ে থাকতো মেখে অঙ।
শরৎ এলে খোঁপায় গোঁজে শুভ্র কাশের ফুল,
মনটা আমার সাতার কাটে আনন্দে মশগুল।


অবসরে পড়ছে মনে— সেই হাঁসুলি’র বাঁক,
সন্ধ্যে হলেই সেথায় নামে বাউল পাখির ঝাঁক।
সেই পাখিরা গাইতো দুলে জীবনবোধের গান,
কোপাই নদী সুর মেলাতো জুড়িয়ে দিত কান।


ওর নাড়ীতে ঘুম এসে যায় উদার বালুর চর,
লাল আঁচলে মায়ের গন্ধ সইতো না আর তর।
তৃষ্ণা মনে আসতো নেমে চোখের পাতায় ঘুম,
এই কপালে জুটত আমার— মন্দাকিনীর চুম।


ভাটার টানে যায় হারিয়ে উদাস মনের দুখ,
শান্তিনিকেতনের সুরে জোয়ার আনে সুখ।
স্বচ্ছজলে সাতার কাটে সাঁওতালি সব ফুল,
ধন্য কোপাই দেয় ভিজিয়ে কোমর সমান চুল।


একটা রবি স্বপ্ন বোনে কলম হাতে তার,
শণের ফাঁকে ছন্দ তোলে সেই পাহারাদার।
একলা পথিক রাত জেগেছি পার করেছি দিন,
মৃদু ঢেউয়ে তৃপ্ত হিয়া বাড়ায় কেবল ঋন।