আমার বন্ধু নীলা, আমার ক্লাসমেট, বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছি আমরা।
একদিন কলেজের ল্যাবে একাই ছিলাম,
একটু আনমনা ছিলাম বোধহয়,
নীলা, কখন এসে পাশে দাঁড়িয়েছে, বুঝতে পারিনি,
এসেই আচমকা জানতে চাইল,
এই তোমার নাকি বাসন্তী রং খুব পছন্দের?
আমি বললাম, বাসন্তী রং? সেটা আবার কেমন! চিনি না তো,
আর একটাও কথা না বলে নীলা চলে গেল।
আরেকদিন এসে বলল,
আমার এক বান্ধবী পরিসংখ্যানে পড়ে, তোমাকে অনেক পছন্দ করে,
তোমাকে জানাতে বলেছে,
তোমার জন্য সে প্রায়শই বাসন্তী রংয়ের জামা পড়ে কলেজে আসে।
কৌতুহলী হলাম, কিছুটা অবাকও, বললাম পরিচয় করিয়ে দিও তো,
একদিন নিজে থেকেই বললাম,
কই তোমার সেই বাসন্তী রং জামাওয়ালীর সাথেতো পরিচয় করিয়ে দিলে না,
হেসে বলল, অপেক্ষা করো।
নীলা কবিতা লিখে, ভালই লিখে,
নতুন কিছু লিখলেই আমাকে আবৃত্তি করে শোনায়,
খুব যে মনোযোগ দিয়ে শুনি, এমনটা বলা যাবে না,
তবুও জোড় করে শোনাবেই,
একদিন খেপানোর জন্য বললাম, কি সব ছাইপাশ লিখ,
এসব আমিও লিখতে পারি,
পারলে আগামীকাল একটা লিখে নিয়ে এসো, বলেই চলে গেল,
কথাটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলাম, একটা কিছু লিখতেই হবে,
অনেক ভাবনার পর জন্ম হলো আমার প্রথম কবিতার,


কলিরা মেলেছে আঁখি পুষ্প শাখেতে,
নাচিয়া চলিছে অলি মধু শুষিতে,
রবি করে প্রাতে জ্বলে নিশির শিশির,
হরষে যাতনা মনে প্রেম পিয়াসীর,
মানসে তুমি আছ মোর স্মৃতি ঘিরে,
নহে তবু বাজে বীণা হৃদয় গভীরে।


কবিতা পড়ে নীলা কি বুঝল কে জানে,
আমাকে আর কোনদিন তার লিখা কবিতা পড়ে শোনায়নি,
বাসন্তী রংও আমাকে আর চিনিয়ে দেয়নি,
তবে, অনেকদিন পর আমি বুঝতে পেরেছিলাম বাসন্তী রংয়ের রহস্য,
ততদিনে আমার জীবনে এসে গেছে আমার কাঙ্খিত বসন্ত,
যার নাম লিখা আছে আমার প্রথম কবিতার প্রতি ছত্রে,
নীলা এখন কোথায় আছে জানি না,
বহুবছর দেখা হয় না আমাদের।


          ২৯/০৪/২০২৪ খ্রিঃ