জানি! কেন সেদিন খুলেছিলে তোমার গোপন দুয়ার—
কেন ভাসাতে চাও,ভিক্ষুকের স্বল্প সম্বল বিপরীত স্রোতে!
আমার ভাঙ্গা চালের আকাশ জুড়ে মেঘছায়া চোখ,
বেশ ছিল জেগে সাদা ঢেউ পথ চেয়ে নীল জলোচ্ছ্বাসে,
তবু ছুঁতে চেয়ে বাড়াই নি হাত অসংখ্য জ্যোত্স্না্র কাছে!
যাই নি কখনো সন্ধ্যাতারার বাসনার বাসর প্রদীপ হতে—
মুখ ঢাকা ওই ব্যর্থ রাতের চাঁদ আসে,যায় ফিরে কতকাল,
হিসেব করে নি তা কোনো বসন্ত বাতাস বহুকাল ধরে।
তবু বেশ আছি,মুখ গুঁজে সভ্যতার অগোচরে চরম বৈরাগ্যে,
তবু বেশ আছি,নগ্ন উঠোনের নির্জন দুয়ারের কোনো এককোণে,
কোনদিন ফিরে যেতে চাইনি কোনো অতীতের হাত ধরে।
কোনদিন ওড়াই নি পাল, তবু উজানেই আছি ভেসে দিনরাত,
থামি নি কোথাও কোনো সর্বনাশের হাতছানি দেওয়া ঘাটে—
ভাঙ্গা মাস্তুলে বসে শুধু গুনেছি সাদা ঢেউ নীল জলোচ্ছ্বাস।
আজও আছি জীবন্ত, একই!মরচেহীন, হয়তো জড়ানো অক্টোপাশে,
বাস্তব কিংবা অতিবাস্তব অস্তিত্বের কোনো ঘরে অনু পরমাণু হয়ে।
আমি চাই নি করুণা পেতে তোমার দীর্ঘশ্বাস হতে—
সে তো তোমার অপ্রাপ্তির শূন্যস্থান পূরণের ছবি মাত্র,
সে তো তোমার মধ্যবিত্ত আকাঙ্ক্ষার স্বল্প পরিসর ঘর,
সে ঘরের অন্তপুরে চাই না যেতে,পেরিয়ে গোপন দুয়ার,
বিপরীত স্রোতে জমা আবর্জনার স্তুপ ঠেলে!
তোমার খোলা দুয়ার সে তো শুধু আপন পথ খোঁজে—
আমার মেঘছায়া চোখ সে তো বাউল প্রানের উচ্ছ্বাস,
তুমি তার ঠিকানায় পারবে না মিশে যেতে কোনদিন,
মধ্যবিত্ত কামনায় সে পথে যায় না হাঁটা অবিরাম,
সে পথ শুধু আমার—যেতে হবে বৈভবহীন ঐস্বর্যের ঘাটে!
যেথা অপার তৃপ্তিতে মিশে যায় প্রাণ ছলনাহীন অন্য প্রাণে,
তাই যেতে চাই এড়িয়ে তোমার দুয়ার সাদা ঢেউ পথ চেয়ে,
মিশে যেতে চায় যেথা প্রাণ ছলনাহীন গভীর সঙ্গমে নীল জলোচ্ছ্বাসে!