অনেক খন্ডে খন্ড করেছি আরশিকে, হাতুড়ির ঘায়ে—
তারপর দাঁড়িয়েছি কোনও মলিন সন্ধ্যার মতো,
হয়তো দাঁড়িয়েছি অতন্দ্র অন্ধকারের বুক থেকে—
ভেসে ওঠা তৃপ্ত সকালের ঘুম ভাঙ্গা পাখির মতো।
দেখতে চেয়েছি, চেয়ে তোমার মতো বহু বিভক্তে—
ঠিক যেমন দেখেছো সামনে দাঁড়িয়ে স্থির চোখে,
আমার দুচোখের তারায় প্রতিবিম্বিত নাট্যমঞ্চে।
কতদিন আমার এ দুচোখ ছিল শুধু বোকা মন্ডপ,
অভিনয় হয়ে গেছে অনেক, এখনো নাটক হবে অনেক!
তার আগে একবার মঞ্চের চারদিকে ইচ্ছে দেখার,
তাই একবার বহু বিভক্তে তোমার মতো দাঁড়িয়ে,
নিজের সামনে নিজেকেই একবার দেখে নিতে চাওয়া—
চাতুরীর সকল খড়কুটো ভাসিয়ে দিয়েছি স্নায়ুতন্ত্রে,
রন্ধ্রে রন্ধ্রে জাগিয়ে নিয়েছি ছলনার সকল তলোয়ার,
সাজগোজে খামতি রাখিনি কোনো!সেজেছি অবিকল,
ঠিক সেই আগের মতো, এক্কেবারে তোমার মতো।
এবার তাকিয়ে দেখবো নিজেকে! হয়তোবা তোমাকে।
তারপর কোনো ক্ষণে বুঝে যেতে পারি ইতিহাসের অন্দর,
হয়তোবা দেখে নিতে পারি একি চোখে চোখ রেখে,
অন্য কিছুকে আঁকড়ে ধরতে চাওয়ার উগ্র আকাঙ্ক্ষা।
তারপর যদি সবুজ ঘাসের বুক হতে জেগে ওঠে,
মৃত্যুপুরী! ছুটে আসে উন্মাদবেগে উল্লসিত বিষ বাণ—
মৃত শরীর ভাসিয়ে দেবো তারপর শোণিত স্রোতে,
ফিরে যাব নত মুখে নিজের কাছে জাগ্রত মন্দির হতে।
অভিনয়! সে যে সাজে না আমায়, তাই ফিরে যাব,
নিজেকে দেখার শেষে,কিংবা সেদিনের মতো অন্তিম চোখে,
শুধু আর একবার তোমায় দেখে,ফিরে যাব আগের মতো—
ভাঙ্গা আরশির ছবি আরশিতে জমা রেখে।