কিছুটা পথের সাথীছিলে তাই—  
অসঙ্গ হতে  চাই নি তোমা থেকে!
আবার চাইনি তোমাতেই থেকে যেতে,
নিভে যাওয়া আগুনের নিরীহ ধোঁয়ার মতো।  
কোন এককালে শরীরের সকল শিকড়—
মাটির অনেক গভীরে যেতে চেয়েছিল,
চেয়েছিল বাঁচতে নীল আকাশের মতো গরিমায়,
শুধু তোমাতে জড়িয়ে উদ্বেগহীন উষ্ণতায়!
তাই অচেতনে জেগে থাকে উজাড় কৃতজ্ঞতা।
—তুমি সাথী করেছিলে অনেকটা পথ,
তোমার পলি উপত্যকায় যতদূর হাঁটা যায়!
তারপর পারনি তুমি নিজেই অতিক্রমে—
তোমার পাথুরে জমির ওপারে যেতে!
আমার দায় আছে অনেক—
দিতে হবে বহুপথ পাড়ি,পথের শেষেরও পরে—  
এক আস্ত শরীরে ওঠা মিছিলের গর্জন,
মুঠো হাত উর্দ্ধমুখের আন্দোলন,
আর আকাশের পানে চেয়ে থাকা ডালপালা,
কচিপাতা, সবুজপাতা, হলুদপাতা—
সবকিছুকেই আগলাতে হবে অক্লান্ত আদরে!
তাই যেদিন তুমি ছুঁড়ে ফেলেছিলে,            
ছুঁড়ে ফেলেছিলে অস্পৃশ্যের মতো,
আছাড়ি পাছাড়ি ক্ষত বিক্ষত করেছিলে,
তোমার পাথর জমির বুকে অতি অবজ্ঞায়—  
কিছুটা অবাক হয়েছি বটে বহুমাত্রিক চিন্তায়,
তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হইনি, শুধু নিশ্চুপ রয়েছি কিছুক্ষণ!
বহুবার এঁকেবেঁকে খুঁজেছি হয়তো তোমায়,
অজান্তে অশ্লীল হয়েছি নিজের কাছে বারে বারে—
তবু অক্ষত এখনো সেই নগ্ন প্রবাহের নদী শরীর।  
কঠিন পাথরের বুক চিরে ঠিক চলে একা বয়ে,
যেমন হেঁটেছি একা,হাঁটছি এখনও—
একেবারে একার মতো নিজেতেই ভর করে।
কোন অবজ্ঞা নেই, নেই কোন অবহেলা,
ভয় নেই কোন,অগম্য এই যাত্রায়—
এখানে যাত্রী আমি একা, ভরসা একাই,
নিশ্চিন্ত এই পথ চলা হয়তো অগস্ত্যের মতো।  
অন্তত আপাত পথশেষের কোন ঠিকানায়—
ফেলে যাওয়ার মতো আর কেউ,
থাকবে না কোনখানে কোন ছলনায়,
একেবারে চিন্তাহীন, উত্তাপহীন নিরুদ্বেগ!  
তবু কিছুটা পথের সাথীছিলে কোনকালে,
তাই তোমা হতে যাই নি সরে চিরতরে,
কৃতজ্ঞতায়,দামি সে সব যা কিছু,
দেরাজের এককোণে রেখেছি যত্ন করে অমলিন—
স্বপ্নের কোন এক ঘরে বিমূর্ত মহিমায়।
তারপর তোমাতেই থেকে গিয়ে—
তোমা হতে সরে যেতে চাই বহু আলোকবর্ষ দূরে,    
চেতন অবচেতনের মাঝপথ ধরে।