একটুখানি সকাল ছুঁতে দাও আমায়—
একার সঙ্গে থাকতে দাও কিছুক্ষণ,
বিকেলের ঝিঙ্গে ফুলে অসংখ্য উড়ছে ফড়িং!
তবু আমি পশরায় বাঁধা পণ্য,
এরপর শুধু খদ্দের আনাগোনা,
হাজার হাতে পরখ,
বড় অশ্লীল লাগে!
বড় অশ্লীল লাগে-দরাদরি দামাদামিতে,
পথের ধার ধরে হাঁটে হাজার চোখ—
যারা সোজা যায়!
তারাও!তারাও আড় চোখে দেখে একবার।
হয়তো বার বার!  
আমি যখন ফুল,
তখন থেকেই আমি পণ্য;
আমি যখন ফল,
তখন থেকেও আমি পণ্য;
আমার জন্ম, আমার যৌবন, আমার বার্ধক্য-
সবেতেই! সবেতেই তোমরা ফালাফালা করেছ আমায়!
কালো পলিথিন প্যাকেটে মোড়া,
একতাল মাংসপিণ্ডের মতো,
আগুনে পুড়িয়ে তৃপ্ত করেছ রসনা!
এখন আমিতো সয়ে নিই কাঠঠোকরার শক্ত ঠোঁট,
কখনো পানকৌটির মুখে ছটপট।
অন্তত তোমরা আমায় একটুখানি সকাল ছুঁতে দাও—
অন্ধকারের আয়নায় নিজেকে দেখে ফিরতে চাই,
নগ্ন শরীর হয়ে একবার কাঁদতে চাই,
একবার হাসতে চাই নিজের মতো করে,
সকালের হাত ধরে।
একবার অন্তত উত্তর পেতে দাও,
তোমাদের চেটে পুটে খাওয়া জিভে,
ঠিক কত লালা আছে জমে—
ঠিক আর কত আবরণ হলে শুক’বে তা,
নাকি আরও আরও বেশি কিছু চাই!
নেবে তোমরা আমার এ শরীর?
একবার ধার নিয়ে দেখ—
আমার এলোচুল, এ কপোল, এ ঠোঁট—
নগ্ন নিতম্ব আর গুরুবক্ষ, সকল সকল কিছু।  
সৃষ্টির কাল হতে পণ্য হয়ে থাকার স্বাদ কেমন হয়!
লালা জমা জিভে ভেসে থাকা কেমন লাগে!
হাজার চোখের গ্রহণে ঢেকে যেতে কেমন লাগে!
হয়তো সবই বুঝে যাবে তখন।  
জানি!প্রত্যাখ্যানই প্রত্যাশিত!
বিকেলের ঝিঙ্গে ফুলে অসংখ্য উড়ছে ফড়িং!
এবার নামবে রাত-
তোমাদের চোখ হতে এবার বেরোবে,
রক্ত মাখা নখদাঁত,
ছুটবে এবার অলিগলি রাজপথ জুড়ে;
আমাকে শুধু রাতটুকু পেরোতে দাও,
একবার শুধু সকাল ছুঁতে দাও,
বিশ্বাস করো!আমি মানুষ;
অন্তত একবার...............!