নিজের মতো করে এবার তুমি জেগে দেখ পৃথিবী—
কাঁঠালের শীত পাতা সব গেছে ঝরে একে একে,
তার সকল প্রবাহ দিয়েছিল ঢেলে উজাড় অকৃপণ—
গোটা শরীরের রক্তরসে সিক্ত করেছে তবুও;  
তবুও এক এক করে গেছে ঝ’রে সব পাতা,
রাতের গর্ভ হতে ওই শোন নীরব অভিযোগ—
শব্দ শুনেতে পাবে নির্বাক কান্নার সকরুণ ধ্বনি;
জানালার ওই পারে জ্বলবে লাল আগুন আর কতকাল!
কতকাল আর পোড়া ছাই উড়বে হৃৎপিণ্ডের এঘর ওঘর;
নিঃশব্দ দহন ধোঁয়ায় চেয়ে দেখ—হয়তো নিষ্ঠুর নির্মাণ চক্রব্যূহে;
স্বপ্ন খুঁজছে কাকের বাসা পরিশ্রান্ত ডানা মেলে ভেসে!  
খোলো চোখ!করো দূর অমবস্যার অভিশপ্ত অভিসার,
বে-রঙ হলেও জেগে থাকো রঙের ক্যানভাসে।    
এখানে খোলা চোখের পাতায় হয়তো জমে বৃষ্টি মেঘ,
অবিশ্রান্ত ফল্গুধারা লুকিয়ে হয়তো বাঁচে মাটির গভীরে;
এখানে যা কিছু সব বেহিসেবি নির্মম ঠকানো কৌশল;
এখানে বাতাসের রঙ প্রতিপলে হয়ে ওঠে বড় ফ্যাকাসে,
চারিদিকে শুধু হাহাকার সব সরে সরে যায়,বড় এলোমেলো!
কালো রঙ হয়ে পাতা ঝরে ডালে ডালে,মেঘ ভাসে—
কালো রঙ হয়ে পাখি উড়ে সঙ্গীহীন-ঠিকানায়,
দিগন্তের ওই পারে দৃশ্যান্তরে নিমেষে মিলায় নিরুদ্দেশে।
নীল আকাশও মাখে কালো রঙ,মেশে মাটির সাথে;
অর্থহীন শব্দের ফিসফাস,মিছে আলিঙ্গনে মিছে কানাকানি,
কতকিছু মিছেমিছি,কি যেন কিসের সাথে চলে বিনিময়,
এখানে সকলকিছু পলক উধাও ক্রমাগত যায় সরে,
এখানে ক্ষণিক বাঁচা,হয়তো বেঁচে থাকা খেলা শুধু ফিকে হয়!    
তুমি একবার চেয়ে দেখ, হয়তো বেমানান লাগবে এসব;
তবু চোখের পাতা খুলে অশরীরী হয়ে ওঠো একবার;
রামধনু রঙ মাখো নতুন আকাশের বুকে,রাখো মাথা—
তার নিঃশ্বাস শোন কান পেতে,চেয়ে দেখ একবার!
উন্মুক্ত করো ক্যানভাস,উজাড় করে ঢালো স্বপ্নরঙ!
খোলো চোখের পাতা!ঘুমিওনা হাজার বছর ধরে,
ঘুমিয়ে থেকো না এ জীবন হতে অন্য জীবনেও!
রামধনু রঙ ছুঁয়ে স্বপ্নগুলো আঁকুক ছবি বহুকাল;
আর পুড়িয়ো না কুঁড়েঘর,করো না ছাই নবীন বসত-
আর উড়িয়ো না শরীর পোড়ানো ধোঁয়া অতি নির্মম ;
সাদা ক্যানভাসে রক্ত-রঙে লুটোপুটি খেয়ে পেয়ে যেতে পার-  
শরীরের ওই পারে চির জাগ্রত;অশরীরী জীবন!
বাঁচিয়ে দাও তাকে স্বপ্নের মাঝে তোমারই অন্য তুমিকে;
নিজেরই হাত ধরে!এ জীবন থেকে কিছু দূর সরে......!!!!