মা, বাড়ি ফিরে যাবে না?
উঁ... ও হ্যাঁ, বাড়ি ফিরবো বাবা,
আর একটু সবুর কর, তোর বাবা আসুক!
মা, ওই যে দড়িতে লাগানো পতাকা উড়ছে,কি ওগুলো?
ওগুলো বুদ্ধদেবের শান্তির বানী-
ওই পতাকায় লেখা আছে।
বাতাস ওদের বয়ে বয়ে চারিদিকে শান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে।
বুদ্ধদেব কে মা?
তিনি মাহামানব,ভগবান,সকলের শান্তির কথা তিনি ভাবতেন;
মা ওই যে ওই লোকগুলো কি সব গাইতে গাইতে কোথায় যাচ্ছে?
ওরা হরিনাম করছে!
হরিনাম কি মা?
ঈশ্বরের নাম প্রচার, শান্তির প্রচার!
চারিদিকে শান্তির গান বাতাসে ভাসিয়ে দিচ্ছে ওরা-
বাতাস সেসব বয়ে বয়ে চারিদিকে শান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে।
মা, ওই যে অতগুলো লোক একসাথে কি করছে?
ওরা নামাজ পড়ছে।
আল্লার কাছে প্রার্থনা করছে সকলের শান্তির জন্য,
বাতাস ওদের প্রার্থনা বয়ে বয়ে চারিদিকে শান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে।
আল্লা কে মা?
তিনি আমাদের সকলের শান্তিদাতা!
শান্তি কি মা?
মা এবার ইতস্তত করতে করতে বলল, শা...শা...ন্তি
তুই আর একটু বড় হ বুঝতে পারবি।
মা জানো! আমাদের ঘরে যখন আগুণ ধরিয়ে দিয়েছিল কিছু লোক-
তখন এমন করে ওরা আগুণ লাগিয়েছিল কেন মা?
আর তখন বাতাসও খুব জোরে বইছিল;
আর আগুণগুলো আরও জোরে জোরে চারদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছিল!
আমাদের পাশের বাড়ি, তার পাশের বাড়ি, সব বাড়িতে;
তবে কি বাতাস ওখানে শান্তি বয়ে নিয়ে গিয়েছিল?
মা, বাবাতো ঘরের ভিতর থেকে বেরোয়নি-
আরও যাদের যাদের ঘরে আগুণ ধরেছিল তারা কেউই বেরোয় নি!
তবে বাবার সাথে তারাও ওখানে খুব শান্তির সাথে আছে বলো?
মায়ের দুচোখ ভরে জল এলো ভেসে-
চুপ কর, চুপ কর বাবা!
ওই দেখ- ওই পথে বোধহয় তোর বাবা ফিরছে!
মা, বাবা আসবে এখানে?আমার বন্ধুরাও আসবে তাহলে?
কি মজা! কি মজা!
দেখো মা,বাবা এখানে এলে-
আমি অনেক শান্তি নেবো বাবার কাছ থেকে;
তুমি নেবে না মা?
আমার খুব খিদে পেয়েছে, কিছু খেতে দাও না মা?
জমানো কান্নার বাঁধ যায় ভেঙ্গে-
আকাশের পানে দু হাত তুলে ছড়িয়ে যায় মায়ের আর্ত চিৎকার!  
হে ঈশ্বর, হে ভগবান বুদ্ধ, হে পরম্ পিতা আল্লা-
তোমরা কোথায় আছো? আমাদের চিরশান্তির দেশে নিয়ে যাও-
নির্বোধ শিশু ফ্যাল ফ্যালিয়ে চেয়ে থাকে মায়ের মুখের দিকে।
শান্তি কি বোঝার চেষ্টা করতে থাকে......