কমে গেছে রৌদ্র জোয়ার--
আর নেই ঘনঘটা
তিনদিন বাসি মড়া, পয়সা জোটেনি চুল্লির
আম খেতে চেয়েছিল
পয়সা ছিল না তখনও--
বড্ড আদুরে সোজা ফাঁস সিলিং পাখায়।
চাষা বাপ সাত ঘাট চষে বাড়ী ফেরে মাঝ রাত্
দু'টি কটা চাল,ডাল জোটে বা জোটেওনা
জমে জমে রোষ চলে গেল ছেলে---

পড়ণের ছেড়া ধুতি ছেড়ে আরও
দোরে মাথা নুয়ে পড়ে আছে মা
শোক যেন বশীভূত অনাহুত শবের কাছে
হাত পেতে শ্মশান খরচ,জুটেছে যা এমনিই
হঠাৎ হঠাৎ মাথা ঠোকা করাঘাত্," বাছা রে আমার
ফিরে নে তোর আবদার"।
চাষা বলে,
" যাক্ গেছে যে"--
দিয়েছে নতুন ধুতি ,ঘাত্হীন প্রতিবাদী দেহ
চরাচর শান্ত খুব অর্থবহ
যেন চেয়ে আছে শৈশব আমের আদর
তিনদিন বাসি ধরে আছে জন্মজ নাড়ী
যেতে নাহি দিব--

কারা যেন হাঁক পারে হরি বোল
জোয়ার হাহাকার ফুলসাজ গাড়ী
ধূপ দীপ সাদা কাপড়ের শাড়ী
বনিক গিন্নী চলেছেন নব সজ্জায়
চাষা ছুটে পায়ে পড়ে,"বাঁচান আমায়
তিনদিন অন্নজলহীন, পুত্রশোক
সঙ্গে তোমার,শুয়ে রাখো পাশাপাশি
বাঁচাও এ দায়-----"

আর্তের চরম অার্তি যেন মা তার মুখ তুলে চায়-
দিল ছেড়ে আবদার যত ছিল জন্মের মতো
শুধু খুলে নিল ধুতিখান্ নিজ যন্ত্রনায়
হু'শ্ বলে দৃষ্টি ঢাকো।

ধরিত্রী দ্বিধাহীন চলেছেন মহা তাড়নায়
চাষাদের ধূসর জীবন বাঁচা,মড়া দু'ই সমান-
রাত শেষ খেলা শেষ প্রান্ত সময়
ক'টা বাজে বৌ ? শুধোয় চাষায়-
গুটি গুটি হেঁটে যায় প্রান্তের মাঠে,দোঁহের ছায়ায়।