কবি নীরেন্দ্র নাথ
*****************


সেইদিন দেখেছিলাম
একজোড়া জ্যোতিষ্ক বলয়
স্ফুলিঙ্গ হয়ে জ্বলে উঠেছিল
ঐ জোড়া চোখের ভেতর !
চিবুকে প্রত্যয়, দৃঢ়তা ঝড়েছিল
ভক্তকূলের আশীর্বানী হয়ে
কিছু মানুষ এমনই হন -
অনেকের মধ্যেও পৃথক, অনন্য, একক


তোমায় দেখেছি
কলম হাতে গোল টেবিলে
মাথায় তখন বিশ্বের জট্
পিতামহের রোগশয্যায় একলা
মেয়েটিকে নিয়ে হাজার চিন্তা তোমার
খাঁদের কিনারে ঘোলা জলের আহ্বান
বাঁচবে কি করে মেয়েটি !


ছোট্ট শিশুটি উঠছিল বেড়ে
একটু একটু করে - সমাজের ডাস্টবিনে
প্রশ্নবিদ্ধ যার ! ও কি বেড়ে উঠবে
তারপর,একসময়, কোনও একদিন
আকাশ ছাড়িয়ে অ-নে-ক
উচ্চতায়, ধরে রাখবে মানুষের মগজগুলো


হল কি তোমার - আচমকাই
গিন্নীর ডিনার প্লেটের ভাত ছিটকে পরল খানিক
শিশুটি তখন হাসছে মিটিমিটি
হাসলেন তিনিও -


না থাক্ -
কিছু বলতে যেয়েও থামলেন
বিরক্ত গিন্নী ' তোমার ঐ
কাগজ কলমকে বলো '
হাসলেন কবি, কেন যে এ ভাষা এত দুর্বহ
এতই ক্লান্তিকর


ঋজুদেহী উন্নত প্রভা
ঠিকরে পরত দ্যুতি - এক একটি অক্ষর
তখন খেলা করত তোমার
মস্তিষ্কের ল্যাবে, দেখতাম জ্বলে উঠলে
চোখ বদলে যেত ভাষা
জানতাম আমি এখনই, ঠিক এখনই
জ্বলে উঠবে তুমি
উলঙ্গ রাজাদের
বস্ত্র জোগানোর জন্য !