[ জীবনে প্রতিদিন হারিয়ে যায় কত মানুষ,কত স্নেহ,প্রেম,ভালোবাসা,শ্রদ্ধা--কেন জানিনা,কোন্ অদৃশ্য শক্তির অবরোধে রুদ্ধ হয় সেই সব আরাধ্য সম্পর্কগুলো ,বুঝতে পারি না--এমনই এক হারিয়ে যাওয়া সম্পর্কের প্রতি আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম ও অন্তরের বেদনা জানিয়ে পাঠিয়ে দিলাম পাঠকমহলে। ভুল হয়ে থাকলে এ অধম আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।]


     প্রিয় বাবা,
       হ্যালো,
       তুমি আর কথা বলবে না বাবা ? দেখ, শেষ আলোর রক্তিম আভা ছুয়েছে অামার প্রাঙ্গণ, একটাও অভিলাষ নেই ফের বরণ করে নেব ঋদ্ধ অতীত গুলোকে, প্রকৃতির দুর্জ্ঞেয় ঘনঘটা নিমিত্তের বাসনায় ছিটিয়েছে কালের ছাই ,তাই দেখ, আগ্রহের পথটা অকস্মাৎই অবরুদ্ধ হলো বাবা, অথচ দেখ কি নিদারুন সমারোহে সকলের পথ চলা, যেন কিচ্ছুটি হয়নি, আমি-ই হারিয়ে গেলাম শুধু। বিদগ্ধ ঝড়ে খসতে খসতে একটা পাপড়িও রইল না অবশিষ্ট,সে সময় তোমাদের সমারোহের মালায় ঝড়েছিল আমার হতাশার নিঃশ্বাস,তুমি শুনতে পাওনি। নিঃশব্দ রাস্তার অগনিত জিজ্ঞাসায় তুমি মুখ ঘুরিয়েছো অনীহায়, পাথরে চাপা পড়েছিল আমার পথগুলো, অদৃশ্য প্রশ্নে কতবার অবহেলায় চলে গেছ , ঘুরে গেছ ,বদলে গেছো, চলে গেছো দেশ,বিদেশে আলোর দেশে,জ্যোৎস্নার দেশে---বলেছিলে এনে দেবে রামধনু নক্ষত্রময় নতুন প্রভাত,অপেক্ষায় ছিলাম বাবা,  ঠায় দাড়িয়ে জোর কমেছে পায়ের। আমার না বলা কথাগুলো সুবর্ণরেখার চর ঘেষে নিয়ে গেছে উৎসাহের কাব্যেরা। আমি দেখছিলাম তোমার নিথর দেহে কেমন ঝড়ছিল নিরর্থক বিসর্জনের অসংখ্য বকূল, পথ অাগলে--নির্বাক তুমি।
কেমন আছো বাবা ? সেই পাঞ্জাবিটা আর আর্মেনিয়ার টুপিটা পড়লে দারুন মানাতো তোমায়, তোমার ভুবন ভোলানো হাসি--হার মানাতো ক্লিওপেট্রার সিলভার মূর্তিকেও।
আমি আছি. আছি বাবা, যেমন তুমি বলেছিলে দেহ-মনের সমন্বয় না হলে হেরে যাবি না, ছুটে যাবি খোলা মাঠে, প্রশ্বাস নিবি প্রাণ ভরে, মেখে নিবি প্রকৃতির আলো----ছুটবি আবার।
ছুটছি কেবল ছুটছি বাবা---দেহে নয় মনে, থামবো কোথায় জানি না,আমার পৃথিবীতে ভোর হয়নি এখনো--বিভেদ প্রাচীর দু'হাতে চেপে রেখেছে সূর্যটাকে আমি চেষ্টা করছি ক্রমাগত,কিন্তু একক শক্তির কাছে-----। যাক্ বাবা, তুমি সুখে থেকো,ভালো থেকো। অবশ হয়ে আসছে আমার হাত---রেডি ওরা---বলেছে বদলে দেবে ঠিকানা----জানিনা কোথায়----কোথায় বাবা ??