গ্রেফতারের পর হতে এ দীর্ঘ সময় চুল দাড়ি নখ কাটা হয়নি হয়তো,
পায়ে শেকল পড়ানোর খুদাই দাগের থোকা থোকা ফুটে আছে শতো।
ঘন কালো দাড়ি মুছ জট পাকানো চুলের ভেতর ঝাপসা কালো মুখ,
শুকিয়ে হয়েছে কাঠ, চেনার তেমন নেই উপায়, জ্বলজ্বল লাল চোখ।
কবিকে নেয়া হচ্ছে ফাঁসির মঞ্চের দিকে, টেনে হিচড়ে, উলঙ্গ বদন,
নিশি-রাত, সুনসান নীরবতায় ভাসছে চারপাশ, সমস্ত ঘুমিয়ে যখন।
সাহসী শব্দবাণে জনমনে বিপ্লবী চেতনা, বারেবারে প্রকম্পিত ধরণি,
গলার স্বরে চেনা যায়, খুব পরিচিত এ কোনো এক কবির কণ্ঠধ্বনি।
যার কণ্ঠধ্বনিতে কণ্ঠ মিলিয়ে বিপদ-আপদে মজলুম জনপদ কাঁদে,
মুখে উচ্চারিত শব্দে ওঠা আওয়াজ কাঁপন ধরায় জালিমের মসনদে।
ফাঁসি হবে কবির, জ্বালিয়ে দেয়া হবে সমস্ত কবিতা, পাণ্ডুলিপি তার,
নিষিদ্ধ হবে কবির কবিতা চর্চা, গলা কাটা হবে আবৃত্তি হলে আবার।
গ্রেফতারী পরোয়ানাও জারি হবে নগর শহর সমস্ত ভক্ত অনুরাগীর,
পুড়িয়ে ফেলা হবে যতো ছাপা কাব্য গান শ্লোগান, গতো আগামীর।
ফাঁসির পর ঝুলিয়ে রাখা হবে দীর্ঘ সময়, পাবে না আত্মীয় আপনে,
গোপনে গেড়ে ফেলা হবে অজানা অচেনা অপরিচিত এক গুরস্থানে।
সমাপ্ত হবে এক অদম্য ইতিহাস,  মুক্তিকামী মানুষের কবিতা, গান,
টিকে রইবে রক্তচোষা আভিজাত্য, বেড়ে উঠবে দুঃশাসনের দালান।