এখানে যদিও অনেক বেশি লোক, তবুও তেমন মানুষ নেই।
এখানে কারো কোনো আবেগ অনুভূতি, হাসি-কান্নাও নেই।
এখানে কৃত্রিমতায় জর্জরিত বিদঘুটে এক বিষন্ন মানচিত্র।
এখানে চাঁদের তারিখের খেয়াল রাখার নেইতো কোনো মিত্র।
এখানে গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত শীত বসন্তে কারো দৃষ্টি নেই।
এখানে বুক পকেটে লজ্জা পুরে দিব্যি বেহায়া সওদা চলেই।
এখানে জীবিকার তাগিদে মানুষ জীবন নিয়ে খেলে দিনমান।
এখানে সূর্যের সোনালী আলো চাঁদের কিরণ খুবই বেমানান।
এখানে সূর্যোদয় সূর্যাস্ত স্রেফ আস্ত ঘড়ির কাঁটায় সীমাবদ্ধ।
এখানে পথে ফুটপাথে উলঙ্গ জীবনের পসরা বসে সারিবদ্ধ।
এখানে মানুষ মানুষের রক্তে দেয় চুমুক, চিবিয়ে মাংস খায়।
এখানে দিন দুপুরে বেশ সস্তায় মানুষ মানুষকে বেছে পালায়।
এখানে মানুষ সহসা পদ পদবীর লোভে সত্য মনুষ্যত্ব বেছে।
এখানে প্রায়শ প্রাণপ্রতিম প্রেমিক ভয়ানক ধর্ষক হয়ে বাঁচে।
এখানে স্বার্থের গরমিলে স্ত্রীর হতেও খুন হয় প্রাণের স্বামী।
এখানে ভাইয়ের বুকে ছুরি চালিয়ে আরেক ভাই আসামী।
এখানে সম্পত্তির ভাগে পিতাকে রক্তাক্ত করে পুত্র আদুরে।
এখানে বস্তাবন্দী লাশ পড়ে রয় চৌরাস্তার মোড়ের অদূরে।
এখানে নবজাতকের মরদেহ ভাসে নোংরা নর্দমার জলে।
এখানে মানুষের মুখোশে নিত্য ঘুরছে অমানুষ সুকৌশলে।
এখানে আত্মীয় অনাত্মীয় সব স্বার্থের সুক্ষ সুতোয় গাঁথা।
এখানে অর্থ বিনিময়ে অঙ্গ রঙ্গ সঙ্গ মেলে যত্রতত্র যথাতথা।
এখানে কায়া ছায়া আছে কেবল, তেমন মায়া নেই কোনো।
এখানে যন্ত্রের মতো ছুটে মানুষ, স্বার্থের দ্বন্দ্ব চরম যেনো।
এখানে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ব্যাপক, প্রতিনিয়ত চলে বিক্ষুব্ধ যুদ্ধ।
এখানে এই যান্ত্রিক শহরে আমি বড্ড বেমানান, অবরুদ্ধ।