অভাগা বন্দীর সরল জবানবন্দী দিচ্ছি, যে নির্মম হত্যাকাণ্ডে দণ্ডিত অপরাধীর মতন,
নালিশ নাই, সালিশ চাই না, বালিশের বুক-জুড়ে নিম্নগামী শিশিরের নিঃশব্দ পতন।
মানুষের পেটেই জন্ম নেয়া আমি নিছক কোনো এক আগাছা মাছ বা প্রতিবন্ধী মাছি,
তবু-ও পাই-না জল, ওড়াউড়ির সম্বল, মিছামিছি ব্যাঙগাছির জীবনটাই কানামাছি।
আমি-তো মানুষই নই, দুষ্ট রুষ্ট মেহগনি পাতা হতে ঝরে পড়া এক ফোঁটা নষ্ট জল,
এই খোয়াড়ের পৃথিবীতে আকাশ আলো বাতাস জোছনা জল আমার সবটাই নকল।
আমার কোনো সাধ স্বপ্ন সকাল নেই, সাধ্যের অবসাদে অন্ধকারও ছেড়ে যায় রাতে,
যেদিকে তাকাই সাগর শুকায়, পাহাড় ধসে খসে পড়ে, বন পোড়ে এ'নষ্ট দৃষ্টিপাতে।
কোনো আশ্রয় নেই, প্রশ্রয় নেই, হায়! আমি নাকি কারো কোনো অতিশয় অভিশাপ!
আমি রিক্ত-শূন্য, তিক্ত-বিরক্ত মুখের নগ্ন কথার ঘৃণ্য জঘন্য অপবাদ, ঘৃণার প্রলাপ।
অদৃশ্য এক শিকলে বাঁধা আমার যাবতীয় আর্তনাদ, বিষাদ মনে প্রতিবাদ নেই কভু,
সভ্যতার এমন অসভ্যতা! ছিড়ে খুঁড়ে খায় রোজ, মরে যেতে যেতে বেঁচে উঠি তবু।
স্বাভাবিক মৃত্যু পেলে পেরিয়ে যেতাম আজ জন্মের এই অপরাধ অপবাদ, নষ্ট ফাঁদ।
সেও কি সম্ভব উচ্ছিষ্টভোগী নষ্ট ভ্রষ্ট নিকৃষ্টদের সৃষ্ট সভ্যতায়! এক অমাবস্যার চাঁদ।
ভালো থেকো পৃথিবী, হৃদয়ে অগ্নি সংযোগ সত্যেও অভিযোগ অনুযোগে নেই প্রমাণ,
আজ দীঘির জলে নিমেষে মিশে যাওয়া শিশির হয়ে মিলিয়ে গেলো নিষ্পাপ এ'প্রাণ।


"সহমর্মিতার সংবেদন"