আদুরে মেয়েটারে তার মায়ে ডেকে বলে হায়!
জানি, নষ্ট হয়েছে সব, তবু কষ্ট পাস নে, আয়।
এ' ধরণীত মায়ের মতো বল কে আছে আপন,
নষ্ট ইতিহাস ভুলে হাস, সমস্ত করে যা গোপন।
লোকচক্ষুর আড়ালে ঢেলেছিস যতো রক্ত লাল,
আঁধারে খুইয়েছিস সম্মানের চাদর ঢাকা গাল।
ওরা পুরুষ, শুধুই পুরুষ, মানুষ ভাবিস কেনো?
কলুষিত হৃদয়ে নারী মানে- মাংসপিণ্ড যেনো।
চুপ, কাঁদিস নে, থামা কলকল দু'চোখের জল,
মুখ খুল্লেই জানাজানি হবে, ঘটবেও অবিকল।
সমাজ তাদের শাসন বারণ আটকাতে পারে না,
কুলাঙ্গারই সব সমাজপতি, কারে দিবি ধরণা?
ওল্টোটা হবে বরং বললে তাদের গোপন কথা,
কৌশলে সুযোগ চাইবে, মিছেমিছি সহমর্মিতা।
বাদ দে মা, কারে-বা দিবি আর নালিশ সালিশ,
অপমানে কেঁদে কেঁদে আর না-ভিজা বালিশ।
ওঠ মা, মুছে নে-তো রক্ত-দাগ, ক্ষতচিহ্ন যতো,
ভুলে যাস নে কিঞ্চিৎ, এ সমাজ পুরুষ শাসিত।
কারে যে কবি আপত্তির কথা, দিবি অভিযোগ?
প্রশাসন, উচ্চ মহলে নেই কোনো যোগাযোগ।
কাঁদিস না মা, কী আর হবে বুক ভেঙে কেঁদে,
ওঠ, গরম জলে গা ধুয়ে চুলগুলোও নে বেঁধে।
ভুলে যা সব যা-যাকিছু ঘটেছে রাতের আঁধার,
বিচার দে ওই এক মহান রব আল্লাহর দরবার।
মুখ যদি খুলিস তুই তবে সব জানাজানি হবে,
লোকেমুখে নোংরা কথার কাঁদা ছুটাছুটি হবে।
সংবাদ মাধ্যমেও ছাপা হবে অতিরঞ্জিত কিছু,
মুখরোচক গল্প দিয়ে ডুবাবে ইজ্জত উচু-নিচু।
বাদ দে মা, বাদ দে বিচার চাওয়ার বাসনা ক্ষুদ্র,
বিচারকও দৃষ্টি বাড়াবে লালসার গভির সমুদ্র।
জর্জরিত করে দিবে নানান প্রশ্নবানে খুঁটিনাটি,
পৃথিবীতে নেই নারীর সম্মানের সত্য সংজ্ঞাটি।
আইনেরই জটিল মারপ্যাঁচে পিষে যাবি শেষে,
নব্য বেশ্যার তকমাই লাগিয়ে দিবে অবশেষে।
আংশিক বিচার যদি পেয়ে যাস ভাগ্য জোরে,
নিজের এ কলঙ্কের দাগ মুছবি কেমন করে?
মা, সমাজে সঠিক বিচার, ন্যায়পরায়ণতা নাই,
শেষে সবে তোকে পেতে করবে ধানাই-পানাই।
বাদ দে মা, স-ব ভুলে যা তুই, ধৈর্য রাখ স্রষ্টায়,
বিচার হবে, হবে বিচার, এ জীবনের শেষটায়।