বহু কালের পুরোনো ডাক বক্সের মতো পড়ে আছে মন সে ঘুণে ধরা নষ্ট জানালায়।
নষ্ট ঘড়ির কাঁটার মতোই ঠাই দাঁড়িয়ে থাকে হৃদয়খানি সে পুকুর ঘাটের আঙিনায়।


আমার ঘরের বারান্দা, মর্চে ধরা টিনের চাল, মাটির উঠোন, দখিনের কাঁঠাল গাছ।
রান্নাঘরের মাটির চুলা, পাতিলের মাচাং, সারি সারি সাজানো কলস, কাঠের ঢেঁকি।
বইয়ের আলমারিতে উইপোকার দল, মাকড়সা জাল পেতে আছে সারা ঘর-দোর।
মেঝেতে ধুলোবালির জড়াজড়ি মনে করায় দীর্ঘদিন কারো পা না-পড়ার ইতিহাস,
দেয়ালের রঙ বিকৃত ভীষণ কালচে কলুষ পোড়া মুখ লুকিয়ে পড়ে আছে আড়ালে।
সিঁড়ির থরে থরে ল্যাপ্টে আছে বহু প্রজন্মের মুখ-ভার অবহেলার বিচিত্র জ্যামিতি।
বৃক্ষরাজি উজাড় পূর্ব পাশের পুকুরটাও শুকিয়ে হয়ে গেছে ভিখারির থালার মতোন।


দু'চোখে ভেসে ওঠে সময়ের রঙিন দেয়াল, খোলা জানালা, ব্যস্ততম দরজার শব্দ।
ঝুম বৃষ্টি, গৃহবন্দী জীবন, টিনের চালে শব্দ, আম কুড়ানো সুখ, বড়শির মাছ ধরা।
পুকুরের গোসল, ডুবসাঁতার, জলকেলি, ঘাটের আড্ডা, নৌকাতে ভেসে বেড়ানো।
খোলা উঠোন, বেহানে রোদ পোহানো, বিকেলের ক্রিকেট বল, রাতের ব্যাডমিন্টন।
গ্রীষ্মে' গরমে খোলা আকাশের নিচে শীতল পাটি পেতে শুয়ে পড়া, গল্পে রাত পার।
পশ্চিমের বারান্দায় ওঠে সমুদ্রে ঝড়ের পূর্বাভাস বুঝা, স্মৃতিরা শিহরণ তুলে হৃদয়ে।