বায়না ধরেছে পড়শীর ছেলেটি-
এনে দিতে হবে আকাশের তারা।
খাবে না সে দানাপানি কোনোটি,
খিদা' কষ্টে তার বীভৎস চেহারা।


শতো কাকুতি মিনতি করছে মা,
তবুও গলে না অবুঝ হৃদয়খানা।
কেঁদে কেঁদে অস্থির, নেই ক্ষ্যামা,
শুনতেই চায় না কোনো বাহানা।


গ্রামে গ্রামে ঘুরে সারা অস্তরাগে-
বাপজানে আনছে অসংখ্য বাঁশ।
ছেলেরে বুঝায় আদরে সোহাগে-
বাঁশে বাঁশ রেখেই ছোঁবে আকাশ।


ক্ষণ গড়িয়ে ধীর পা' এলো রাত,
উঠলো জেগে সুগোল এক চাঁদ।
চারপাশ ভরে জোছনার সংঘাত-
দু'দশ গুন বাড়িয়ে দিয়েছে কাঁদ।


এবার তো বাবুটি করেছে বায়না-
গোটা গোল ঐ চাঁদটা তার চাই,
ত্বরা করে চায় সে তারা নিবে না,
নিরুপায় বাবা সান্ত্বনা ভাষা নাই।


অসুস্থ ছেলে, শরীরে ভীষণ তাপ,
কাতর হৃদয়ে পরিবার দিশেহারা।
মাথায় হাতটা বুলিয়ে বলে বাপ-
ভোর হলে এনে দিবে চাঁদ তারা।


অসুস্থ ছেলেটি চেয়ে চেয়ে দেখে-
একবার মুখ, তারপর মায়ের মুখ,
হেসে মায়ের কোলে মাথা রেখে-
কী যেনো বলতে চায় ক্লান্ত চোখ।


কোলের শিশুরে রেখে মা-জননী
কাঁদছে খুব নয়নের জলে ভিজে।
নিচু স্বরে বলছে ভীষণ অভিমানী
ছেলের কষ্ট নিতে চায় মা নিজে।


রাতের শেষে রাঙা প্রভাত এলো,
পাখি ও পথিকের স্বরে ঘুম ভাঙে।
ততক্ষণে দেখে সব এলোমেলো,
আদরের বাছাধন আর না জাগে।


বাবা-ধন বেঁচে নেই, আর নেই-রে,
বুঝতে পেরে মা দিলেন চিৎকার।
বেহুঁশ হয়েই পড়ে গেলো দুয়ারে,
ঘরজুড়ে নেমে এলো স্তব্ধ আঁধার।