"স্বপ্ন চুরি হয়ে গেছে  আমার"
কবিতা রচনায় এবং আবৃত্তিতে : মানিক পাল


হটাৎ সেদিন, হৃদয়ের জং ধরা সিন্দুকটি খুলে দেখি
স্বপ্নের ছোট্ট কৌটোটি নেই সেখানে;
তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়িয়ে
কোথাও পেলুম না ঘরের এখানে ওখানে।


স্বপ্ন চুরি হয়ে গেছে
তাই ডাইরী করেছিলাম লোকাল পুলিশে;
উৎকোচে গেল শ'খানেক টাকা
তড়িৎ প্রয়োজনের অতি উচ্ছ্বাসে।


বড় দারোগা বললেন - পুলিশ রেকর্ড  বলে
অবহেলা সবার কেড়ে নিয়ে যায় স্বপ্ন দেখার আশায়,
স্বপ্নের কুঁড়ি ফেরারি হয়ে যায় তামাদি ভালোবাসায়।
অবহেলাকে মেনে নিতে হবে মন মন-অন্তরে,
নয়ত, শোকাহত হবে নিষ্ফল আশায় খুঁজতে দেশান্তরে।


অবহেলাকে যখন মেনেই নিয়েছিলুম
তখনও ঝড় থামছিল না মনের ধু ধু প্রান্তরে,
ঝড় এসে একদিন একটি পুঁটুলি হাতে ধরিয়ে দিয়ে
কোথায় যেন চলে গেল উধাও হয়ে সঙ্গোপনে।
অনভ্যস্ত রতির অস্থির খুঁজে পাওয়ার তাগিদের মত  
কামাতুর হাতে হাতড়ে বেড়িয়েছি পুঁটুলির দরোজা উৎঘাটনে।
শেষে, পেয়েও গেলুম।


খুলে দেখি, পুরানো কাপড়ে
রিফু করা বিবর্ণ নকশী কাঁথায়
জীবনের একটি থলে।
ভেতরে ঠাসা প্রসন্নতা আর বিষন্নতার প্রসাধনে,
দু'একটি বাক্সে পেয়েও গেলুম
দুর্ভাগ্যের ফুটো সারানোর লিকোপ্লাস্টে।


প্রত্যাক্ষিত প্রেমের ব্যাথা উপশমের
মলমও পেয়ে গেলুম ছোট্ট দু'টো কৌটোতে;
ধিক্কার হজমের ট্যাবলেটের পাতাটি ও
খুঁজে পেলুম শেষে বাঁ পাশের থলের কোণেতে।


ব্যর্থ প্রেমের ভগ্ন হৃদয় জোড়াতে
ছোট্ট টিউবে আত্মপ্রত্যয়ী প্রতিজ্ঞার ফেবিকল;
না পাওয়ার ব্যথার উপলব্ধ যন্ত্রণায়
শরীর মালিশে সান্ত্বনার তেলে ভরা
কাঁচের একটি মাঝারি বোতল।


স্বপ্ন ছাড়া, সবই পেয়ে গেলুম থলেতে!
তবুও, হাতড়ে বেড়াচ্ছি ছোট্ট একটি কৌটো;
থাকবে যাতে ভালোবাসার ভ্রূণ উদ্গিরনের বীজ কলি
যে ভ্রূণ লালনায় অপেক্ষায় আমার বিরান ভ্রূণস্থলী।


নব বীজের অঙ্কুরিত ফসলে
ভালোবাসার চারাটি বাড়াব বিভোর স্বপ্নে;
স্বপ্ন রাখব ভরে হৃদয়ের সিন্ধুকে
এবার, চাবিটি থাকবে নিরাপদে সযত্নে।