সকালে দাঁত মাজার সময় হঠাৎই চোখ পড়ল
হাতের তালুর উল্টোপিঠে ।
চমকে উঠি
এ কী  !
এ কার হাত  ?
চামড়ায় অসংখ্য ভাঁজ পড়েছে।
ক্যালেন্ডারে চোখ রাখি
তিনকুড়ি পেরোবে
বাকী আর তিন মাস।


সে ছিল এক চৈত্রের সকাল।
অফিসের প্রথম দিন
যাওয়ার পথে স্টেশনের পাশের ময়দানে দেখেছিলাম
সাঙ্গপাঙ্গো নিয়ে কোন উঠতি নেতা
একটি ছোট্ট পলাশ গাছ
পুঁতে দিয়ে গেল।
ছবি তোলার লোকের অভাব ছিল না।


আজও চৈত্র মাসের সকাল।
অফিসের শেষ দিন
যাওয়ার পথে নেমে পড়ি ময়দানে।
রুদ্র পলাশ আজ বৃক্ষ
গোড়ায় বসে থাকি
চুপচাপ মিনিট দশ ।
রুদ্রপলাশটার শুধুই মৃত্যু আছে
কোন অবসর নেই।


ফেয়ারওয়েল।
ঘোষক ছেলেটি বেশ বাকচতুর
আমার নামেও বেশ প্রশস্তি গাইল।
যে সাহেবের সামনে রোজ
ফাইল হাতে দাঁড়িয়ে থাকতাম
আজ সেও আমার পাশের চেয়ারে।
কাল থেকে দুজনেরই এক পরিচয়
'অবসরপ্রাপ্ত'।
অবসরে সাহেবের সাথে 'মাছি মারা কেরানীদের
তেমন বিশেষ ফারাক থাকে না।


এরপর শুরু হবে নতুন জীবন
কারো আক্ষেপ পূরণ
নতুন করে বেড়ে ওঠা।
মরণ তো একদিন আসবেই
তবুও আরও কিছুটা নতুন পথচলা ।
কারো ঘটবে স্বপ্নের সমাধি
অক্লান্ত মৃত্যুর প্রতীক্ষা প্রতিদিন।


একদিন এই শরীর থেকেও
নেব অবসর।
আমার 'আমি'গুলো সব
জ্বলে পুড়ে যাবে শ্মশানে।


না।  সব পুড়বে না।
না পোড়া জিনিসের
অধিকার নিয়ে হয়ত
হবে চুলচেরা হিসেব।

কে বলে মরে গেলে
কেউ মনে রাখে না  ?