দেখেছি আমি তোমার সেই অচেনা মুখ খানি,
  উন্নত নাসিকা পটল আঁখি মুক্তয় বাঁধা দানি ।
  সে অনেক লোকের ভীড়ে জীবন চলার পথে,
  নেবে বুঝি মোরে আপন করে তোমার সাথে !
  মুক্তাঝরা শিশিরের মত শত যেন ফোটা ফুল,
  দেখেছি তোমার ওগো সেই নিশি কালো চুল ।
  মুক্তা হাসি হেসে সে-দিন তুমি বলেছিলে মোরে,
  অচেনারে ভালো বেসে ওগো প্রিয় যেওনা'ক দূরে ।
  প্রেয়সী হ'ব তোমা' আমি জীবন চলার সাথী,
  দুঃখ ঘুচাব অন্ধকারে জ্বালাব মোমের বাতি ।
  অশ্রু ভেজা সাগর পেরিয়ে সেথা যাব মোরা চলে,
  সেখানে অচেনা মানিকের মতো মুক্তামতি জ্বেলে ।
  যেথায় অজস্র কত মুক্তা মানিকের ছড়া ছড়ি,
  খেলিব সেথা দোহে দোহে আপনারে জড়াজড়ি ।
            দু'জনে সেথায় ভাসিয়ে প্রেমের ভেলা ,
  করিব দোহে অচেনার মাঝে স্রসটার সেই খেলা ।
  ঝোঁপে ঝাঁড়ে সেথা কুঁহু কুঁহু স্বরে ডাকে কোঁকিল,
  কুলে কুলে সেথা উছলিয়া ওঠে তব শুভ্র সলিল ।
  সে মায়াপুরী অচেনা তব সে এক নতুন দেশ,
  রাত্রি সেথা ফুল ফোঁটে নোতুন সুরের আবেশ ।
  বেঁধেছ আজ রিদয়টি মোর শুন্য মরুর তরে,
  শত মরিচিকা ফুটিছে পথে হারিয়ে সূর্য ঘোরে ।
  রাত্রি কালে নভো তলে তব ফুটিছে জোনাক আলো,
  তারি পানে চেয়ে বন্ধু ওগো ঘোমটা খুলে ফেলো ।
                               সে যে মানবী বেশে,
  চাঁদনি রাতে জড়িয়েছ মোরে মধুর আবেশে ।
  শুনায়ে মোরে রুপালি দেশের মন মাতানো গান,
  গানের সুরে ক্ষনে ক্ষনে তাই ঝরিয়ে মধুর তান ।
  কোঁকিলের ন্যায় কন্ঠ নাকি আলোকের পথ রেখা,
  চলিতে চলিতে অচেনা সে মেয়েটিরে হ'ল দেখা ।
  জীবন নদীর মোহনায় ছিল সে কোন রুপসী,
  এক পলকের দেখা দিয়ে কোথা গেল সরসী ।
  ক্ষণেক দেখাই প্রেমের মুকুল ফুটেছিল রিদ কুঞ্জে,
  দোলনার মতো হাওয়ায় দোলে শুন্য রিদয় মঞ্চে ।
                      হে মোর নিশিথ রাতের বন্ধু ,
  বাতাসে বাতাসে ভাসে আজো তোমার প্রেমেরগন্ধ ।
  পল্লবের 'পর পড়িছে তব একফোঁটা মুক্তা শিশির,
  কেঁদে কেঁদে খুঁজেছি তোমা'লেখা নাই সে নিশির ,
  বাদলের ধারা ছুটে চলে পারা নিভিয়াছে কত বাতি,
  এসেছিলে তুমি অচেনা বন্ধু তিমির গভীর রাতি ।
  ফাগুনের রেশ রাখিয়া গিয়াছ আমার রিদয় মাঝে,
  একা বসি কাঁদি জীবনের দ্বারে মরণ সন্ধ্যা সাঁঝে ।
  কাজলের টিপ পরে আছে দূর নভে চিত্ত মনি ,
  শূ্ন্য এ বুকে আজো তোমারে পাওয়ার দিন গুনি ।
                              হয়ত সে কোন মাসে,
  গানে গানে মোর ভরেছ জীবন মৃ্ত্যুর আবেশে ।
  যাও ভুলে যাও অচেনা বন্ধু আসিবনা আর দ্বারে,
মুছে ফুলে সব স্মৃতির চিহ্ন মুছে ফেল একেবারে ।
এক দিন তুমি বলেছিলে সাথী হবে জনমের মত,
অজানা দোলায় শঙ্কিত মন খোঁজে কারে অবিরত ।
বন বনানীর তীর ঘেশে চলেছে কে মৃ্দু মন্দ পায়ে,
দখিনা হাওয়ায় সুগন্ধ আঁচল উড়ে যেন বায়ে বায়ে ,
মনে হয় সেই অচেনা বন্ধু যে মোরে ভুলে গেছে ,
জীবন দুয়ারে তার লাগি মন একটু করুনা যাঁচে ।
প্রেম কুঞ্জে মধু মালতিরে কাঁদালো অচেনা হিয়া,
হরিয়া নিয়া অচেনা এমন যে গেছে শেল হানিয়া ।
                   ওগো মধুমিতা মোর বাসর ঘরে,
  বিচ্ছেদ সুরে উথলিয়া উঠিছে নয়নাশ্রু ভরে ।
অচেনার মাঝে অচেনা এ প্রাণ মিশিয়াছে একাকার,
জীবনের পাড়ী বন্ধুর সে পথ অশ্রুতে যে পারাবার ।
ফুল কুমারী ফুলের দেশে সে যে মোর ফুল পরী,
সেথায় বুঝি আছ গো প্রিয়া নিজেকে আঁড়াল করি ।
মোর দুঃখে সম ব্যথি হয়ে কাঁদিতেছে নীলাকাশ ,
হাহাকার রবে চিৎকার তুলিছে বুঝি দখিনা বাতাশ ।
এসো সতত হে মায়া এসো বুভুক্ষা রিদয় মাঝে,
এসোগো প্রিয়া আবীরের অনুরাগে  মাধবী সাঁঝে ।