কবিতা কি?-এটি একটি চিরন্তন প্রশ্ন।কবিতা রচিত
হয় ভাষার সাহাযযে,কিন্তু ভাষামাত্রই কবিতা নয়।
আমরা দৈনন্দিন জীবনে মনের ভাব প্রকাশের জন্য
প্রতি মুহূর্তে যে বিচিত্র বাক্য বিনিময় করছি,সে গুলো
কবিতার আওতায় পড়েনা।সংবাদপত্রে প্রতিদিন যে
ভাষারাশি ব্যবহৃত হয় তাও কবিতা নয়।কবিতা বিশে
ষ এক ধরণের ভাষাসজ্জা বা শব্দসজ্জা।তাত্ত্বিকদের
মতে কবিতা নির্মিত হয় ভাষার অপরিচিতকরন-এর
মাধযমে।দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহৃত ভাষা কবিতায়
ব্যবহৃত হলে তার রুপ পালতে যায়,আপাত বিসদৃশ
সজ্জা বা বিন্যাসের ফলে বাচ্যের অর্থ পাল্টে যায়,ভাষা
হয়ে ওঠে প্রতীকধর্মী বা ব্যঞ্জনাময়,এরুপ বিশেষ শব্দ
বিন্যাসই কবিতা।কবিতা একটি ভাষিক কর্ম।সে ভাষা
দৈনন্দিন প্রয়োজনের ভাষা নয়।তাহ'লে জীবনে কবি-
তার প্রয়োজনীয়তা কোথায়? এ প্রশ্নটি স্বাভাবিক ভাবে
ই এসে পড়ে।কবিতা মূলত মানুষের মানসিক চর্চার
বিষয়।কবিতা একদিক থেকে মানুষের সৌন্দর্য ও
স্বপ্নকল্পনার সৃজনক্ষেত্র,অন্যদিকে তা জাগতিক সুখ-
দুঃখের বিমোক্ষনে সহায়ক।মানুষ তার কোণে লুকিয়ে
থাকা ভীতি,আশঙ্কা,কামনার পাশবিক বীভৎসতা
কবিতা তথা শিল্প-সৃজনের মধ্য দিয়ে অবমুক্ত করে,
ফলে তার মানসিক স্থিতি বজায় থাকে। কবিতা রচ-
নার কারণ ও কবিতার প্রয়োজনীয়তার সম্পর্কে এ
হ'ল মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা।আবার কবিতা রচনার সামা-
জিক,রাজনৈতিক বা মতাদর্শগত প্রাসঙ্গিকতাও রয়ে
ছে;তেমনি রয়েছে মানুষের স্বভাবগত কারন।
  কবিতার মধ্যদিয়ে একজন মানুষ তার রাজনৈতিক
বা মানসিক মূল্যবোধ গুলকে তুলে ধরতে পারেন।
নিজের বিশ্বাস অন্যদের মাঝে প্রকাশ বা সঞ্চার
করবার অভীপ্সা মানুষের চিরন্তন।এই স্বভাবও
কবিতা সৃজনে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। সে কারণে
কবিতা মানব জীবনের একটি অপরিহার্য ও প্রয়ো-
জনীয় অনুসংগ ।