বাংলা কাব্যে সনেট'সনেট' ছিলনা।মাইকেল মধুসূদন দত্ত পাশ্চাত্যের আদর্শে অমিত্রাক্ষর ছন্দের আমদানি করেছেন তেমনি সনেটের রূপকল্পও গড়ে তুলেছেন।
বাংলা কাব্যে তিনি এই নতুন রীতি প্রবর্তন করেন।ইতা
লীয় কবি পেত্রারক সর্ব প্রথম সনেট রচনা করেন।
তারপর শেক্সপিয়ার ও মিল্টন ইংরেজিতে সনেট রচনা
করে সনেটের গঠনে বৈচিত্র্য আনেন।মধূসুদন ইতালীয়
সনেটের আদর্শে বাংলায় সনেট রচনায় ব্রতীহন।তিনি
প্রায় ১০২ টি সনেট রচনা করেন।এ গুলোর ভিতর দিয়ে
বাংলা কাব্যে এক নতুন কাব্যরীতি গড়ে ওঠে যা বাংলা
কাব্যে ছিল সম্পূর্ণ অভিনব।মধূসুদন তাঁর রচিত সনেটকে চতুর্দশপদী কবিতা আখ্যাদেন।কারণ,সনেটে
১৪টি পদ বা পংক্তি থাকে।নির্দিষ্ট ছন্দ নিয়মের অধীনে
এগুলোতে কবির আত্মগত ভাব প্রকাশ পায়।সেজন্য
সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা গীতি কবিতার অন্তর্গত।
সনেটের আংগিক একটি নির্দিষ্ট নিয়মে বাঁধা।অবশ্য কোন কোন কবি যেমন,শেক্সপিয়ার,মিল্টন প্রমুখ আদি সনেটের রীতিকে সামনে রেখে নতুন রীতির
জন্ম দিয়েছেন।সনেটে ১৪ টি পংক্তি থাকে,প্রতিটি
পংক্তিতে ১৪ টি অক্ষর।দুটি স্তবক থাকে-প্রথম আট
পংক্তিকে বলা হয় অষ্টক এবং শেষ ছয় পংক্তি নিয়ে
ষষ্ঠক গথিত। শেক্সপিয়ারিয়ান সনেটে অবশ্য এই
স্তবক ভাগ নেই।অষ্টকের মিল বিন্যাস এইরুপ,
কখখক,কখখক।ষটকের মিল বিন্যাস তিন রকম
হতে পারে।যথা, ১)গঘ গঘ গঘ ২)গঘঙ,গঘঙ ৩)
গঘঙ,ঘগঙ ।মধূসুদন তাঁর রচিত চতুর্দশপদী কবিতা
গুলোতে নানা ভাবের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।বিষয়বস্তুর
বৈচিত্র্য সনেট গুলোকে উজ্জ্বলতা দিয়েছে।